শামিম হোসেন,দমদম,আপনজন: মুসলিমদের নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কলকাতায় আয়োজিত জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের নির্বাহী কমিটি। শনিবার কলকাতার বাঁকড়ায় জমিয়ত ভবনে অনুষ্ঠিত জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সর্বভারতীয় অধিবেশনে মাওলানা আসাদ মাদানী হলের সভাপতিত্বে জাতীয় ওয়ার্কিং কমিটির দুই দিনব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দেশের বর্তমান সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি ও ডজন খানেক এজেন্ডা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। জমিয়তের চলমান কর্মকাণ্ডের মূল্যায়ন করা হয়। এক ডজন এজেন্ডা এদিনের বৈঠকে আলোচিত হয় এবং বিস্তারিত আলোচনার পর পরবর্তী রণকৌশল স্থির করার জন্য একাধিক প্রস্তাবনা গৃহীত হয়। এর মধ্যে অন্যতম হল (কেন্দ্রের) শাসকদলের কৃপাদাক্ষিণ্যে মুসলিম বিদ্বেষী কর্মকান্ড (হেট ক্যাম্পেনের)বিরোধিতা ও মুসলিমদের নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ। জমিয়তেন উলমায়ে হিন্দ-এর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা হাকিমুদ্দিন কাসমী আগের কার্যক্রমগুলো পড়ে শুনান। সভাপতির বক্তব্যে, জমিয়ত উলমা হিন্দের সভাপতি মাওলানা মাহমুদ মাদানী বলেন, জমিয়ত উলামায়ে হিন্দের আসল কাজই দেশ ও দশের পথনির্দেশনা। জমিয়ত উলমা-ই-হিন্দ মিল্লাতকে দিকনির্দেশনা দিয়ে দেশের স্বাধীনতা ও পরবর্তীকালে তার দায়িত্ব ভালভাবে পালন করেছে, যা ইতিহাসে আমাদের জন্য গর্বের বিষয় বলে মনে করে। আজকের বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহান ব্যক্তিত্বকে এদেশে প্রকাশ্যে অপমান করা হয়েছে, খুবই দুঃখজনক। তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, আমরা এটা বলে বসে থাকতে পারি না যে, শুধুমাত্র নির্বাচনের জন্য এসব ঘৃণ্য বীজ বপন করা হয়। কিন্তু এটা মূলত মুসলিম ও তার ধর্মীয় পরিচয়ের উপর হামলা। এমন সময় জমিয়তকে তার দায়িত্ব পালন করতে হবে। তাকে এগিয়ে এসে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। উপরন্তু, পারস্পরিক ঘৃণার পরিবেশের অবসান এবং যে ভুল বোঝাবুঝির প্রাচীর তৈরি করা হয়েছে তা ভেঙ্গে ফেলার জন্য কর্মসূচী ঠিক করতে হবে। ভুল বোঝাবুঝি নিরসন ছাড়া এই সব সম্ভব নয়। তাই জাতীয় ওয়ার্কিং কমিটি তাদের সম্মেলনে অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা করার পর কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেয়।
এর পাশাপাশি এই অধিবেশন আয়োজন করার জন্য জনাব মাওলানা মাহমুদ মাদানী পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য জমিয়তে উলামার সভাপতি মাওলানা সিদ্দীকুল্লাহ চোধুরী ও তাঁর সহকর্মীদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এদিনের সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দারুল উলুম দেওবন্দের উপাচার্য মুফতি আবুল কাসিম নোমানী, দারুল উলুম দেওবন্দের সহ-উপাচার্য মুফতি রাশিদ আযমী, আজমের শরীফ দরগাহর পীরজাদা মাওলানা সিরাজুদ্দীন মঈনী,, মাওলানা রহমতুল্লাহ মীর কোম্মীর), মুফতি সালমান মনসুরপুরী (উত্তর প্রদেশ), মুফতি জাভেদ ইকবাল (বিহার), মাওলানা সিদ্দীকুল্লাহ চৌধুরী (পশ্চিমবঙ্গ), ক্বারী মুহাম্মদ আমীন (রাজস্থান), মাওলানা সালমান বিজনৌরি উত্তরপ্রদেশ), মুফতি আহমেদ দেউলা (গুজরাত), মুফতি ইফতেখার কাসেমী (কর্ণাটক), হাজী মুহাম্মদ হাসান (তামিল নাড়ু), মাওলানা নিয়াজ ফারুকী (দিল্লী), মুফতি মুহাম্মদ ইব্রাহিম (কেরালা) প্রমুখ ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct