দেবাশীষ পাল, গাজোল: রাজ্য সরকারের নির্দেশ মতো সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করতে না পেরে গাজলের ৫১২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন চাষিরা। মঙ্গলবার সকাল থেকেই এই ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গাজোল থানার তুলসী ডাঙ্গা কিষাণ মান্ডি এলাকায়। এদিন কিষাণ মান্ডি এলাকার জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান চাষিরা। তাঁদের অভিযোগ, অন্ধকার রাত থেকে আমরা নিজেদের উৎপাদিত জমির ধান বিক্রি করার জন্য কিষাণ মান্ডি চত্বরে লাইন দিয়ে রয়েছি। কিন্তু সকাল ১১ টায় অফিস খোলার পর আমাদের জানিয়ে দেওয়া হয় কয়েকজনের কাছ থেকে সহায়ক মূল্য ধার নেওয়া হবে। তাও আবার ২৫ কুইন্টালের বেশি নেওয়া যাবে না। যেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির ছবি দিয়েই চাষিদের কাছ থেকে ৪৫ কু্ইন্টাল মাথাপিছু ধান বিক্রির নির্দেশ জারি করেছে রাজ্য সরকার। অথচ আমাদের কাছ থেকে সে সরকারি নির্দেশিকা মেনে ধান কেনার ব্যবস্থা করছে না সংশ্লিষ্ট এলাকার কিষাণ মান্ডি কর্তৃপক্ষ। অনেককে আবার কুপন না দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরফলে সরাসরি ধান বিক্রি করার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়েছেন। এক্ষেত্রে ফরেড়া ধান বিক্রিতে কালোবাজারি করবে বলেও অভিযোগ তুলেছেন বিক্ষোভকারীরা চাষিরা।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী হাজার ১৯৪০ টাকা কুইন্টাল পিছু চাষিদের কাছ থেকে সহায়ক মূল্যে ধান কেনার হবে । চাষিরা মাথাপিছু ৪৫ কুইন্টাল করে ধান বিক্রি করতে পারবেন।
এদিন বিক্ষোভকারী আমিরুল আনসারী, সহদেব মন্ডলদের বক্তব্য, ভোররাত থেকে আমরা গাজোলের কিষাণ মান্ডি এলাকায় ধান বিক্রির জন্য লাইন দিয়ে রয়েছি। সকাল হলেই অফিস খুললে আমরা নিজেদের উৎপাদিত জমির ধান বিক্রি করতে পারবো। কিন্তু এখানে কয়েকজন অফিসারেরা এসে আমাদের বলেছেন ২৫ কুইন্টালের বেশি সহায়ক মূল্য ধান বিক্রি করা যাবে না । তার পাশাপাশি হাতেগোনা কয়েকজন চাষিদের কুপন দিয়ে ধান নেওয়ার কথা জানিয়েছে। তাহলে অসংখ্য চাষিরা যাবে কোথায়। তাঁরা ধান বিক্রি করবেন কী করে। এরই প্রতিবাদ জানিয়ে এদিন গাজলের তুলসীডাঙ্গার কিষাণ মান্ডি এলাকার জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো হয়।
এদিকে অবরোধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় গাজোল থানার পুলিশ । গাজোল ব্লকের বিভিন্ন এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে শতাধিক চাষিরা সহায়ক মূল্য ধানের দাম না পেয়ে বিক্ষোভ দেখান। দীর্ঘক্ষন আলোচনার পর সংশ্লিষ্ট এলাকার কিষাণ মান্ডি জাতীয় সড়কে বিক্ষোভকারীদের আশ্বস্ত করে পুলিশ অবরোধ তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করে।
যদিও এ ব্যাপারে জেলা খাদ্য নিয়ামক দপ্তর এবং কৃষি বিপনন দপ্তরের পক্ষ থেকে কোনো রকম প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct