রাজু আনসারী, অরঙ্গাবাদ: দুই ছেলেকে এমবিবিএস ডাক্তার করানোর স্বপ্ন ছিল বাবার। গর্বের সাথে সর্বভারতীয় ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষা অর্থাৎ নিট পরীক্ষা দিতে দুই ছেলেকে নিয়ে কলকাতাও গিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের সুতি থানা এলাকার পেশায় শিক্ষক সেলিম জাভেদ। কিন্তু পরীক্ষা দিতে নিয়ে গেলেও ছেলেদের সেই পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার আগেই হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয় বাবা সেলিম জাভেদের। দুই ভাইয়ের পরিবারে রয়েছে মা বোন ও দাদু। বাড়ির কর্তার মৃত্যুতে কার্যত শোকের ছায়া নেমে আসে পরিবারে। এরই মাঝে সম্প্রতি প্রকাশিত হয় সর্বভারতীয় ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষা অর্থাৎ নিট পরীক্ষার ফলাফল। তাতেই কার্যত বাবার স্বপ্ন পূরণ করে বাজিমাত করে দুই সন্তান ওয়াসিম জাভেদ এবং মোহাম্মদ ইকবাল জাভেদ। আল আমীন মিশনের ছাত্র ওয়াসিম জাভেদের প্রাপ্ত নম্বর ৬৩৬। তার স্থান হয়েছে ৬৮৪৬ এবং ভয়েস পাবলিক ইস্কুলের ছাত্র ইকবাল জাভেদের প্রাপ্ত নম্বর ৬০৬। তার প্রাপ্ত নম্বর ১৬৪৪৬।
এলাকার কৃতি সেই দুই ভাইকে সংবর্ধনা প্রদান করলো অরঙ্গাবাদ টাউন ক্লাব। খেলাপ্রেমী মৃত শিক্ষক সেলিম জাভেদের দুই সন্তানকে মোমিনপাড়ার বাড়ি গিয়ে সংবর্ধনা প্রদান করেন অরঙ্গাবাদ টাউন ক্লাবের সেক্রেটারি তথা সুতি-২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি মাসাদুল হক ওরফে পিকু মাস্টার। ফুলের মালা ও মিষ্টি দিয়ে সংবর্ধনার পাশাপাশি যে কোনো প্রয়োজনে পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি। পিকু মাস্টারের কাছে সংবর্ধনা পেয়ে খুশি হন ওয়াসিম জাভেদ এবং ইকবাল জাভেদের পরিবার।
কৃতি ছাত্র ওয়াসিম জাভেদ জানান, ছোট থেকেই ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা ছিলো। কঠোর পরিশ্রম করেই আজ সফল হয়েছি। সফলতার পেছনে বাবার হাত রইলেও আজ বাবা নেই। আগামীদিনে ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করতে চাই অন্যদিকে কৃতি দুই ছাত্রের মা রিলী আজম কার্যত কান্নায় ভেঙে পড়েন। ছেলের সাফল্য আসলেও মায়ের ভারাক্রান্ত মনে বারবার স্বামীর কথা মনে পড়ছে। এদিকে অরঙ্গাবাদ টাউন ক্লাবের সেক্রেটারি তথা সুতি-২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি মাসাদুল হক ওরফে পিকু মাস্টার জানান, দুই ভাই এলাকার মুখকে উজ্বল করেছে। এলাকাবাসী হিসাবে আমরা গর্বিত। তাদের সাফল্য কামনা করছি।