জয়প্রকাশ কুইরি ,পুরুলিয়া: দীর্ঘ প্রায় পনেরো মাস ধরে করোনার কাছে হার মেনেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর পঠন পাঠন। সম্প্রতি ২০২০ সালে ট্যাব দেওয়া হয়েছিল তৎকালীন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের অনলাইন পড়াশুনার জন্য। বাস্তবে ট্যাব পাওয়ার পর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাও হলো না তাদের। ইদানিং কিছু ছেলে অনলাইন পড়াশুনার অজুহাতে তাদের বাড়ির লোকজনের কাছে জোর করে ট্যাব আদায় করার ঘটনাও ঘটছে। অন্যদিকে শিক্ষা প্রতিষ্টান গুলোতে অনলাইন পড়াশুনাও হচ্ছে নমনমো করে বলে দাবী অনেকেরই। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে অনলাইন ক্লাস নিয়মিত হলেও তাতে ছাত্র ছাত্রীদের উপস্থিতির সংখ্যাটা একেবারে হাতে গোনা। অথচ বাস্তবে যে ছবিটা ধরা পড়েছে সেই ছবিটা কিন্তু একেবারে নেশার থেকেও ভয়ঙ্কর। উল্লেখ্য গ্রাম বা শহরের আনাচে কানাচে ছোট বড় খেলার মাঠ গুলোতে এক সময় ছেলেরা ক্রিকেট ,ফুটবল ,কবাডি ইত্যাদি খেলা করতো। পাশাপাশি চলতো নিয়মিত শরীর চর্চাও তবে এখন সেসব যেন একেবারে অতীত। বর্তমানে দেখা যাচ্ছে দিনের অধিকাংশ সময় এমনকি গভীর রাত পর্যন্ত ছেলেরা ব্যস্ত থাকছে ফ্রি ফায়ার বা এই ধরণের অন্যান্য অনলাইন গেম নিয়ে। যেসব সবুজ মাঠে একসময় তীর বেগে ছুটে আসতো ফুটবল বা ক্রিকেট বল এখন সেখানে শোনা যায় ফ্রী ফায়ারের যান্ত্রিক শব্দ। স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার কারনে পড়াশুনা বলা যায় একেবারে লাটে উঠেছে। ভবিৎষত সম্পর্কেও চিন্তা ভাবনা নেই তাদের। সেকারণেই বাবা মায়ের অজান্তে প্রথম যৌবনের সুবর্ণ সুযোগ তারা হেলায় হারাচ্ছে। কিছুদিন পূর্বে ভারত সরকার দ্বারা কতকগুলি অনলাইন গেম বা এপ্লিকেশন বন্ধ করা হলেও বর্তমান সময়ে ফ্রি ফায়ার এর মতো একটি বিপজ্জনক গেম বন্ধ করবে না সরকার ? নাকি সুকুমারমতি ছাত্র ছাত্রীদের স্বপ্নগুলো মুঠোফোনেই জব্দ হয়ে যাবে ভাবনা সব মহলেই। এবিষয়ে পুরুলিয়ার ঝালদা থানার কুটিডি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক অরূপ কুমার গোপ মন্ডল একরাশ হতাশা নিয়ে জানালেন, ফায়ার মানে আগুন। ফ্রী ফায়ার এখন শিশু কিশোরদের চিন্তা চেতনা মন মননে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। অবিলম্বে সরকার এই গেমটি বন্ধ না করলে ওদের স্বপ্নগুলো পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। এই বিপজ্জনক গেমটি কবে বন্ধ হবে সেটাই এখন বড়ো প্রশ্ন সবার কাছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct