সঞ্জীব মল্লিক, বাঁকুড়া: আফগানিস্তানে তালিবানরা ক্ষমতায় আসায় আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে বাঁকুড়া জেলার সোনামুখী শহরের বাসিন্দা পাগড়ি তৈরির সঙ্গে যুক্ত শিল্পীরা। এখানকার বাসিন্দাদের একাংশ পাগড়ি তৈরি করেন। ওই পাগড়ি এতদিন নির্বিঘ্নে চালান যেত আফগানিস্তানে।গত ৪০ বছর ধরে এই ব্যবসা চলছে বলে জানা গেল। আরও জানা গেল, সুরাটের একটি সংস্থাও এদের থেকে পাগড়ি কিনে আফগানিস্তানে রফতানি করত। আফগানিস্তানের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পাগড়ি রফতানি বন্ধ। ফলে বিপর্যস্ত সোনামুখী শহরের বাসিন্দা ১৫০ জন পাগড়ি শিল্পী। এখানকার ক্ষতিগ্রস্ত পাগড়ি শিল্পীদের তরফে বলেছেন, ‘করোনা পরিস্থিতি এবং লকডাউন পাগড়ির ব্যবসার ব্যাপক ক্ষতি করেছে। এরপর আফগানিস্তানে রাজনৈতিক পালাবদলের পর ব্যবসার অবস্থা এখন শোচনীয়।’
কাবুল থেকে সোনামুখী শহরের দূরত্ব ৩ হাজার কিলোমিটার। জানা গিয়েছে, চার দশক আগে কয়েকজন কাবুলিওয়ালা পাঠানকোট থেকে জীবিকার তাগিদে সোনামুখী এসেছিলেন। কাবুলিওয়ালার ওই দলটির সঙ্গে স্থানীয় তাঁতিদের সুসম্পর্ক তৈরি হয়। সেসময় তাঁতিরা শাড়ি তৈরি করতেন। ওদের কাবুলিওয়ালারা ভালোবেসে পাগড়ি তৈরির কলাকৌশল শিখিয়ে দেন। এরপর থেকে এখান থেকে পাগড়ি রফতানি হচ্ছে।জানা গেল, একেকটি পাগড়ির দাম ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকার মতো। এদিকে আফগানিস্তানে বেশ কিছুদিন ধরেই পাগড়ি রফতানি বন্ধ থাকায় শিল্পীদের হতে পয়সা আসছে না। এখান থেকে পাগড়ি কলকাতাতেও পাঠানো হয়। সেগুলো তারপর আফগানিস্তানে চালান করা হত এতদিন। ব্যবসায়ীরা জানালেন, ইতিমধ্যে ক্ষতির পরিমাণ ১ কোটি টাকা।এদিকে কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, সেকথাও বলা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে সোনামুখী পৌরসভার সহ পৌর প্রশাসক প্রদীপ লাহা আমাদের ক্যামেরার মুখোমুখি হয়ে জানান , সত্যি এই সময়ে পাগড়ী শিল্পীরা অত্যন্ত খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে । আমরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করে তাদেরকে কিভাবে আর্থিক সহযোগিতা করা যায় তার চেষ্টা করব ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct