সেখ মহম্মদ ইমরান, ঘাটাল: ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের অনুমোদন দিচ্ছে না কেন্দ্র , পরিকল্পিত বন্যায় ভাসছে ঘাটাল। বার বার কেন্দ্রকে বলেছি। কিন্তু তার পরেও ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের অনুমোদন দিচ্ছে না কেন্দ্র। এ রকম হলে বার বার বন্যা হবে। এই প্রজেক্ট তৈরি না হলে ঘাটালকে বাঁচানো যাবে না। বন্যায় ঘাটালের বিপর্যস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন করে এভাবেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি তিনি ঘোষণা করেন, সৌমেন মহাপাত্র, দেব, জুন মালিয়া সকলকে কেন্দ্রীয় সেচ মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে বলব। কেন্দ্রের কাছে প্রতিনিধি দল পাঠাব।
প্রায় ১১ দিন ধরে জল বন্দি হয়ে রয়েছে ঘাটাল। মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম থেকে হেলিকপ্টারে রওনা দেন। বেলা ১২টা নাগাদ ঘাটালে পৌঁছান তিনি। হেলিকপ্টারে করে ঘাটাল যাওয়ার পথে আকাশপথে বন্যা কবলিত এলাকাগুলো পর্যবেক্ষণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নিজের ফোনে তা ক্যামেরা বন্দীও করেন তিনি।
ঘাটালে পৌঁছে তিনি শ্রী শ্রী অনুকূল ঠাকুরের আশ্রম এ যান। সেখানে গিয়ে মন্দিরের পুরোহিতদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। আশ্রমের বাইরে বন্যাদুর্গতদের হাতে ত্রাণ তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন ঘাটালের সাংসদ দেব, রাজ্যের সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, মন্ত্রী মানস ভূঁইঞা, শিউলি সাহা, হুমায়ুন কবির, শ্রীকান্ত মাহাতো, বিধায়ক জুন মালিয়া, জেলা সভাপতি অজিত মাইতি সহ প্রশাসন অধিকারিকরা। তাঁদের সঙ্গে নিয়ে বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করতে গিয়ে তিনি আবারও হয়ে উঠলেন মা মাটি মানুষের নেত্রী। এক হাঁটু সমান বন্যার জলে নেমে গিয়ে তিনি পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করলেন। জলে দাঁড়িয়েই জেলাশাসক রশ্মি কমলের সঙ্গে প্রয়োজনীয় আলোচনা সারেন। সেই সঙ্গে সাংসদ দেবকে ডেকেও বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। এইভাবে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে কাজ করতে দেখে ভরসা পেলেন ঘাটালের বন্যা দুর্গতরা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'ঝাড়গ্রাম থেকে আসার পথে হেলিকপ্টার থেকে দেখেছি৷ বাড়ি,ঘর,মাঠ দোকান সব ভেসে গিয়েছে৷ ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে বার বার বলা হচ্ছে৷ কেন্দ্র অনুমোদন দিচ্ছে না ৷ ছোটবেলা থেকে মানসদাদের কাছে শুনছি মেদিনীপুর মানেই কপালেশ্বর- কেলেঘাই প্রকল্প৷ আমরা ৭০০ কোটি টাকা দিয়ে সেই কাজ করে দিয়েছি৷ ফলে মানুষ অনেকটাই উপকৃত হয়েছেন৷ এখন বর্ষা বেশি হচ্ছে৷ তার উপর জল ছেড়ে দেওয়ার ফলে পরিকল্পিত বন্যা হচ্ছে৷'
তিনি আরো বলেন, '৫০০ কোটি টাকায় চেকড্যামগুলি তৈরি হয়েছে। কিন্তু পরিকল্পনা করে কাজ হচ্ছে না। প্রশাসনকে আরও বেশি কাজ করতে হবে। আরও অনেক ক্যাম্প তৈরি করতে হবে।' তিনি ভারত সেবাশ্রম সংঘ, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, এনজিওগুলোকে বেশি বেশি করে এসমস্ত এলাকায় এগিয়ে আসার আহবান জানান। ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতি দেখে তিনি কলকাতা ফিরে যাবেন। কথা বলবেন প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct