জয়প্রকাশ কুইরি, পুরুলিয়া: মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির পুরুলিয়া জেলা শাখার উদ্যোগে এবার অন্য রকমভাবে পালিত হল শিক্ষাবিদ ও সমাজ সংস্কারক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৩১ তম প্রয়াণ দিবস। বিদ্যাসাগর জীবনব্যাপী লড়াই করেছিলেন বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে ও নারী শিক্ষার সপক্ষে। বিদ্যার বিকাশে তাঁর অপরিসীম অবদান ছিল। আবার অন্যদিকে তিনি দয়ার সাগরও ছিলেন। অসহায় মানুষকে তিনি সহায়তা করেছেন সারা জীবন ধরেই। মেদিনীপুরের বীরসিংহ গ্রাম থেকে ঝাড়খণ্ডের কারমাটাঁড় পর্যন্ত অসহায় বঞ্চিত পীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি।
পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবনের এই দুই দিগন্তের মেলবন্ধন ঘটেছে সমিতির আজকের প্রচেষ্টায়। সমিতির সীমিত সামর্থ্যে বিদ্যাসাগরের প্রয়ান দিবসের স্মরণ অনুষ্ঠান হয় ঝালদা থানার পাহাড় ঘেঁষা পাঁড়রি গ্রামে। প্রথমেই বিদ্যাসাগরের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেন সমিতির রাজ্য নেতৃত্ব জেলা নেতৃত্ব সহ আপামর গ্রামবাসী ও উপস্থিত ছাত্রছাত্রীরা। তারপর সমিতির সদস্যরা বিদ্যাসাগরের বৈচিত্র্যময় কর্মজীবন ও প্রতিবাদী ভাবনার কথা তুলে ধরেন। ছাত্র-ছাত্রীদের অনুপ্রাণিত উৎসাহিত ও পড়াশোনায় অনুরাগী করার জন্যই। সেই সঙ্গে অভিভাবকদের সচেতন করার জন্য বাল্যবিবাহের কুফল গুলি তাদের সামনে তুলে ধরা হয়। পাহাড় ঘেঁষা পাঁড়রি গ্রামের অধিকাংশ মানুষের দিন চলে জঙ্গল থেকে কাঠ সংগ্রহ করে। দীর্ঘদিন লকডাউন থাকায় তাও বন্ধ হতে বসেছে। বাইরে কাজ করতে যাওয়ারও উপায় নেই তাদের। এইরকম সংকটজনক পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকাটাই দায় হয়ে পড়েছে গ্রামবাসীদের পক্ষে। পারিবারিক অভাব অনটনের জন্য শিক্ষার্থীদের হাতে শিক্ষা সহায়ক উপকরণ নেই। তাই সমিতির উদ্যোগে গ্রামের সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় শিক্ষা সহায়ক উপকরণ। সেইসঙ্গে গ্রামবাসীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় কিছু শুকনো খাবার। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক ভূপাল চন্দ্র মাহাত, অশোক কুমার মাহাত, মদন মাহাত, ললিত কিশোর মাহাত ও আরো অনেকে। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন শিক্ষক অরূপ কুমার গোপ মন্ডল। আড়ম্বর পূর্ণ না হলেও আন্তরিকতা পূর্ণ ছিল অনুষ্ঠানটি। তাই অনুষ্ঠানের শেষে ছাত্র-ছাত্রীদের আনন্দ মাখা মুখ মুগ্ধ করেছে সবাইকে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct