আপনজন ডেস্ক: মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকের পর দেশজুড়ে কৌতূহল ছিল কী কথা হয়েছে। তা জানতে যখন সাংবাদিকরা হাজির হয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাউথ অ্যাভিনিউয়ের বাংলোর সামনে। ঝরঝর বৃষ্টির মধ্যে কোনও রকমে মাথা বাঁচিয়ে প্রদানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক সেরে ভাইপোর এই বাংলোতে উঠেছিলেন। কিন্তু বাইরে ঝমঝম বৃষ্টির মধ্যে সাংবাদিকদের অপেক্ষা করা দেখে তিনি আর চুপ করে থাকতে পারেননি। নিজেই ছাতা হাতে সাংবাদিকদের সামেন বক্তব্য রাখতে থাকেন। কাদা জলকে তোয়াক্কা না করে এক হাতে ছাতা আর এক হাতে মাইক্রোফোন ধরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিলেন। মঙ্গলবার মমতার আগামী দিনের পথ চলার এক ঝলক মাত্র দেখা গেল, এখনও অনেক বাকি। তাই এক হাতে ছাতা ধরে মমতা বুঝিয়ে দিলেনন ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে তিনি দেশের জনগণের মাথায় ছাতা ধরতেই এই দিল্লি সফর করছেন। তিনি বিরোধী দলের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থীর মুখ হিসেবে নেতৃত্ব দেবেন কিনা সাংবাদিকরা জানতে চাইলে মমতা বলেন, বিরোধী ঐক্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে এগোবে। ভারত নেতৃত্ব দেবে ও আমরা তা অনুসরণ করব।
সেই সম্ভাবনার কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় ত্বরিত তুলে ধরলেন রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তার ট্যুইটার অ্যাকাউন্টে লিখলেন, ‘বৃষ্টিতে ছাতা। নিজের হাতে। ২০২৪-এ এই ছাতা ধরবেন দেশবাসীর মাথায়। জনবিরোধী নীতির কালো মেঘের দুর্যোগ থেকে বাঁচাতে। এটা ট্রেলার। পিকচার অভি বাকি হ্যায়।’
কুণাল ঘোষের এই মন্তব্য আসার আগে অবশ্য সেই কাজে তৎপর হয়েছেন মমতা। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর মমতা বৈঠক করেছেন কংগ্রেসের দুই প্রবীণ নেতা কমল নাথ ও আনন্দ শর্মার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এই বৈঠকে বিরোধী জোট নিযে কোনও কথা হওয়ার কথা অস্বীকার করা হলেও তিনি বলেন, জোট নিয়ে আলোচনার জন্য আমাদের নেতৃত্ব রয়েছেন। কিন্তু মমতাজির নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। আর আনন্দ শর্মা জানিয়েছেন, দেশের বর্তমান অবস্থা নিয়ে কথা হয়েছে। মমতাকে বাংলার তৃতীয়বার জেতার জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছি। আগামিকাল সোনিয়াজির সঙ্গে মমতাজির বৈঠক রয়েছে।
বুধবার সোনিয়া গান্ধির সঙ্গে মমতার বৈঠক হওয়ার কথা। শরদ পাওয়ার ও শিবসেনা নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক হওয়ার কথা। অরবিন্দ কেজরিওয়াল, শাবানা আজমিও মমতার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছেন। তাদেরকে সময় দিয়েছেনসমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবও দেখা করতে সময় চেয়েছেন মমতার কাছে। ফলে, বিরোধী নেতৃত্বের কাছে মমতাই প্রধান মুখ হয়ে উঠতে চলেছেন। এর পিছনে পশ্চিমবাংলার বিধানসভা নির্বাচনে মমতার সাফল্যই মূল কারণ।
বিধানসভা নির্বাচনে যেভাবে মোদি-অমিত শাহের জুটির প্রভাবকে খর্ব করে দিয়ে বিপুল আসন নিয়ে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল সরকার তাতে দেশজুড়ে একটা আশার আলে দেখিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশেষ করে বিজেপি বিরোধী নেতৃত্বের কাছে। তাই শীর্ষ বিরোধী দলের নেতারা আগামী ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিরোধীদের প্রধান মুখ হিসেবে মমতাকে তুলে ধরার ইঙ্গিত দিয়েছেন। নির্বাচনী রণকৌশল তৈরি করাই মূলত প্রধান প্রতিপাদ্য বিষয়। তৃণমুল কংগ্রেস তাদের সংসদীয় কমিটির চেয়ারপার্সন মমতার দিকে তাই তাকিয়ে বিরোধী নেতৃত্ব।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct