আপনজন: একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনে এক বিরল অভিজ্ঞতা হয়েছে। বিধানসভার ভিতরে মসজিদে জুম্মার নামায পড়ে বিধানসভা অধিবেশনে যোগদানের জন্য যাই। সংযুক্ত মোর্চার প্রতিনিধি হিসেবে নির্দিষ্ট বসে খসড়া বাজেট অধিবেশনের শুরুতে রাজ্যপালের ভাষণ। অধীর আগ্রহ ছিল রাজ্যপালের ভাষণ নিয়ে। তার ভাষণ শুরু হতেই চোখে পড়র বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে ওয়ালে নেমে তার দলীয় বিধায়করা রাজ্যপালের ভাষণের চরম বিরোধিতায় নামেন। তাদের হই হট্টগোলে রাজ্যপালের ভাষণ সংক্ষিপ্ত করে শেষ করতে হয়। সেটাই বিধানসভার প্রথম অধিবেশনে থাকা একজন বিধায়ক হিসেবে প্রথম চাক্ষুষ সাক্ষী থাকা। এরপর দ্বিতীয় অধিবেশনের অপেক্ষায় থাকা। এর ফাঁকে বিধানসভায় লাইব্রেরিতে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। সেখানে গিয়ে মুগ্ধ হলাম। সেখানে গিয়ে বিধানসভা সম্পর্কে নানা তথ্য জানতে পারলাম। এছাড়া দায়িত্বে থাকা আধিকারিক একেবারে শিক্ষকের মতো যাবতীয় বিষয় বিশেষ করে নানা জিজ্ঞাস্য এমনভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন যাতে মুগ্ধ হওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। একজন বিধায়ককে তার বিধানসভা সম্পর্কে তথ্য জানার আগ্রহকে যথাযথ সম্মান জানিয়ে আধিকারিকদের অকপট বুঝিয়ে দেওয়া এটাই প্রমাণ করে এখনও দায়িত্ববোধ সম্পন্ন অফিসাররা বিদায় নেননি। তাদের নম্র ব্যবহার ও আর বিধানসভার লাইব্রেরির সমাহার যেকোনও বিধায়ককে টানবেই। একজন নতুন বিধায়কের পক্ষে বিধানসভার লাইব্রেরি নিঃসন্দেহে একটা সম্পদ। বিভিন্ন সময়ে ডাকসাইটে বিধায়কদের বিধানসভায় ভাষণ উদ্দীপ্ত করতে রসদ জোগাবার জন্য যথেষ্ট এই লাইব্রেরি। লাইব্রেরি দর্শনের পর ফের বিধানসভার দ্বিতীয় অধিবেশনে হাজির থাকা। মূলত ডেপুটি স্পিকার নির্বাচনে অংশ নেওয়া পর্ব।
এক্ষেত্রে কোনও পক্ষকেই সমর্থন না করে ‘নোটা’ হিসেবেই নিজেকে তুলে ধরাকে শ্রেয় বলে মনে করি। এদিনের মতো অধিবেশন শেষ করে বিধানসভা কক্ষ ত্যাগ করলেও কতগুলো সংকল্প নেওয়ার উৎসাহ জুগিয়েছে।
আমি নিজেতে আইএসএফ বিধায়ক হিসেবে না দেখে সংযুক্ত মোর্চার প্রতিনিধি হিসেবেই দেখতে বেশি ভালাবসি। বিধানসভায় সংযুক্ত মোর্চা প্রতিনিধি হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে তাদের পরামর্শ ও সহযোগিতা পাচ্ছি। তাই বিধানসভায় জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনগণের চাহিদা, সমস্যা ও তা দূরীকরণ এবং সার্বিক উন্নয়নকে পাথেয় করেই আমাকে এগাতে হবে তা বিলক্ষণ বুঝেছি। বিধানসভায় আমি বিধায়ক হিসেবে কী দিয়ে শুরু করব তার আগাম পরিকল্পনা। রাজ্যের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সমাজ উন্নয়নকে গুরুত্ব দিতে চােই। তাই আমি বিধানসভায় বলার যখন প্রথম সুযোগ পাব তখন দুটি বিষয় তুলে ধরতে চাই।দাবি করতে চাই। তার মধ্যে অগ্রাধিকার কিন্তু শিক্ষাই। তাই রাজ্য সরকারের কাছে আমার প্রথম দাবি ফুরফুরা শরীফের পীর আবু বকর সিদ্দিকী রহ.-এর স্মৃতিতে একটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মুর্শিদাবাদ জেলায় একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন। বিধানসভায় অধিবেশনে বক্তব্য রাখার সুযোগ পেলেই এই দুই বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার দাবি তুলে ধরতে চাই। উচ্চ শিক্ষার সুযোগ করে দেওয়ার আরও বিস্তৃত পথ খুলে দেওয়ার লক্ষ্যে আমার এই দাবি থাকবে। যার ফলে, শিক্ষার সোপানে মানুষ এগিয়ে যাওয়ার মাধ্যম পেতে পারে। অনুলিখন: সুলেখা নাজনিন
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct