আপনজন ডেস্ক: দেশের ইমারাতে শরীয়াহর পঞ্চম আমিরুল হিন্দ নির্বাচিত হলেন দারুল উলুম দেওবন্দের অধ্যক্ষ হযরত মাওলানা সৈয়দ আরশাদ মাদানী। আর নায়েবে আমির নির্বাচিত হয়েছেন জামিআ কাসিমুল উলুম শাহী মুরাদাবাদের মুফতী ও শাইখুল হাদিস হযরত মাওলানা আসাদ মাদানি রহ-এর খলিফা মুফতি মুহাম্মদ সালমান মনসুরপুরী।
শনিবার নয়াদিল্লির জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের কেন্দ্রীয় অফিসে মাওলানা মাদানি ও মাওলানা আরধাম মাদানি গোষ্ঠীর সম্মিলিত এক বৈঠকে দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমদের উপস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের নব নির্বাচিত সভাপতি হযরত মাওলানা মাহমুদ মাদানী নতুন আমিরুল হিন্দ হিসেবে তাঁর চাচা তথা বিশিষ্ট আলেম হযরত মাওলানা সৈয়দ আরশাদ মাদানির নাম প্রস্তাব করেন। তার প্রস্তাবে উপস্থিত সদস্যরা একমত হওয়ায় দারুল উলূম দেওবন্দের মুহতামিম মুফতি আবুল কাসেম নোমানি আমিরুল হিন্দ হিসেবে সৈয়দ আরশাদ মাদানির নাম ঘোষণা করেন।
নতুন আমিরুল হিন্দ নির্বচিত হওয়ায় সেয়দ মাওলান আরশাদ মাদানিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের রাজ্য সভাপতি মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি, সম্পাদক মুফতি আবদুস সালাম, পশ্চিমবঙ্গ জমিয়তে উলামার সম্পাদক ক্বারী শামসুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ১৯১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই ভারতীয় মুসলমানদের ধর্মীয় বিষয়াদির সমাধান ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার লক্ষ্যে একজন আমিরুল হিন্দ নির্বাচন করার প্রয়োজন অনুভব করে। সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে রেশমী রুমাল আন্দোলনের মহানায়ক শায়খুল হিন্দ মাওলানা মাহমুদ হাসান দেওবন্দি(১৮৫১-১৯২০) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। কিন্তু তখন পরিবেশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না থাকায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত না হলেও প্রাদেশিক পর্যায়ে বিহার রাজ্যে এর বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়। পাশাপাশি গোটা ভারতবর্ষের জন্য একজন আমিরুল হিন্দ নির্বাচন করার চেষ্টা অব্যাহত থাকে ।
এই ধারাবাহিকতায় ১৯৮৬ সালের নভেম্বরে পুরো ভারতবর্ষে ইমারাতে শারইয়্যাহ হিন্দের কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দিল্লিতে একটি বৃহত্তর প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
ওই বৈঠকে সর্বপ্রথম আমিরুল হিন্দ হিসেবে মাওলানা হাবিবুর রহমান আজমী (১৯০১-১৯৯২) নির্বাচিত হন। ১৯৯২ সালে মাওলানা হাবিবুর রহমান আজমীর ইন্তেকালের পর দ্বিতীয় আমিরুল হিন্দ হিসেবে নির্বাচিত হন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের তৎকালীন সভাপতি মাওলানা সৈয়দ আসাদ মাদানি (১৯২৮-২০০৬)। তার ইন্তেকালের পর ২০০৬ সালে তৃতীয় আমিরুল হিন্দ হিসেবে নির্বাচিত হন দারুল উলুম দেওবন্দের দীর্ঘ ২৮ বছরের সফল মুহতামিম মাওলানা মারগুবুর রহমান বিজনুরী।
২০১১ সালে তার ইন্তেকালের পর চতুর্থ আমিরুল হিন্দ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন সর্বভারতীয় জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের প্রাক্তন সভাপতি হযরত মাওলানা ক্বারী উসমান মনসুরপুরী। গত মে মাসে তার মৃত্যুর পর শনিবার অনুষ্ঠিত প্রতিনিধি সম্মেলনে পঞ্চম আমিরুল হিন্দ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন হরযত মাওলানা আরশাদ মাদানি। আর তার সহযোগী হিসেবে কাজ করবেন মুফতি সালমান মনসূরপুরী। এদিসেন এই আমিরুল হিন্দ নির্বচানের বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা আবদুল আলিম ফারুকী, মাওলানা নেমাতুল্লাহ, মাওলানা রহমাতুল্লাহ কাশ্মীরি, মুফতি আহমদ দেওলা, মাওলানা সৈয়দ আসজাদ মাদানী, অসমের প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা মাওলানা বদরুদ্দীন আজমল, মাওলানা সৈয়দ আশহাদ রশিদী প্রমূখ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct