আপনজন ডেস্ক: দেশের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি এবং সাধারণভাবে প্রস্তুতির ক্ষেত্রে কোভিড মহামারি বহু শিক্ষা নেওয়ার পথ প্রশস্ত করেছে। তাই করোনা মোকাবিলায় জনগণের কল্যাণে নতুন করে স্বাস্থ্য পরিকল্পনা করার প্রয়োজন রয়েছে। যোধপুর ভিত্তিক সংস্থা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ইমপ্রিমেন্টেশন রিসার্চ অন নন কমিউনিটি ডিজিজ আযোজিত এক ওয়েবিনারে রবিবার একথা বলেন নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।
ওয়েবিনারে ভাষণ দেওয়ার সময় অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি, কল্যাণ এবং স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার অর্থনৈতিক দিকের উপর তিনি মনোনিবেশ করেন। স্বাস্থ্য পরিস্থিতির অর্থনৈতিক দিক সম্পর্কে তিনি বলেন, করোনা আবহে ভারতে যা পরিস্থিতি তাতে জীবনযাত্রার রোগে আক্রান্ত একটি বৃহৎ জনসংখ্যা রয়েছে, যাকে অ-যোগাযোগযোগ্য রোগ বা এনসিডি নামেই পরিচিত।
এই এনসিডি সম্পর্কে সচেতনতাই মূল চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে অভিজিৎ বলেন, করোনা মহামারির প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে বহু তরুণ মারা গিয়েছিল, তবে তাদের প্রকৃত কারণ শনাক্ত করা যায়নি। তরুণদের মৃত্যু কোনও উপসর্গ ছাড়াই ধরা সংঘটিত হয়েছে। অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, দেশের যে কল্যাণ ব্যবস্থা তা মহামারির জন্য তৈরি করা হয়নি। ভবিষ্যতে এই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় কল্যাণ ব্যবস্থা পুনরায় পরিকল্পনার উপর জোর দেন।
দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়ে বলতে গিয়ে অভিজিৎ হাতুড়ে ডাক্তার ও স্টেরয়েড ব্যবহারের কথা উল্লেখ করে তার পরিণতি স্মরণ করিয়ে দেন। একটি সমীক্ষার উল্লেখ করে তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে, কম ওজনের মহিলারা প্রায়শই বিয়ের জন্য ওজন ধরে রাখতে স্টেরয়েড গ্রহণ করেন এবং এই স্টেরয়েডগুলি স্থানীয় মুদি দোকানেও সহজেই পাওয়া যায়।
গ্রামীণ অঞ্চলে হাতুড়ে চিকিৎসা খোলাখুলি হয়। তার ফলে ওষুধের প্রকৃত ব্যবহারে ব্যাঘাত ঘটে বলে তিনি মন্তব্য করেন। খুব সাধারণ অসুস্থতায় ওষুধের অতিরিক্ত ওষুধ দেওয়ার বিষয়টিও তুলে ধরেন। জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা তিনি বলেন, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলি খালি পড়ে থাকে। নার্সদের বেশিরভাগ সময়ই পাওয়া যায় না। তখন মানুষকে হাতুড়ে চিকিৎসকের দিকে যেতে উৎসাহিত করে।
এছাড়া তিনি বলেন, একজন এমবিবিএস ডাক্তার একজন রোগীকে গড় প্রায় দুই মিনিট দেখেন। অথচ, হাতুড়ে ডাক্তাররা অনেক সময় ধরে দেখেন। সময় দেনতাই পরিস্থিতি বিচারে হাতুড়ে ডাক্তারের কাছে যেতে বাধ্য হন মানুষ।
আর ডাক্তাররা যখন কোনও ওষুধ দিতে অস্বীকার করেন, তখন আমরা বলি, কিছু ওষুধ তো দিন। তাই প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা প্রয়োজন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct