সুলেখা নাজনিন: সাম্প্রতিক কালে দেশজুড়ে যে রাজনৈতিক বাতাবরণ তাতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের ব্যক্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানোয় উপযুক্ত সময় এসেছে। এতদিন বিভিন্ন রাজ্যে মোদি মিথ বা মোদি ম্যাজিকের যে ঝলক ছিল তা ইদানিং উবে গেছে বলা যায়। সব কা সাথ সবকা বিকাশ- এই স্লোগানকে ভিত্তি করে নরেন্দ্র মোদি যেভাবে দেশের জনগণকে ‘মোহিত’ করে ক্ষমতায় এসেছেন সেই চমক আর এখন দেখা যাচ্ছে না। এক দশক ধরে দেখা যাচ্ছে, মোদি-শাহ জুটি যে রাজ্যে গিয়ে জোরকদমে লেগে পড়েছেন সেখানে বিজেপি বিরোধী শক্তিকে চূর্ণ করে দিয়েছেন। যদিও ক্রমে ক্রমে তাদের পায়ের তলার মাটি আলগা হয়ে আসছিল। বাকচাতুরতায় মোদি বিরোধী দলের রাহুল গান্ধিকে পিছনে ফেলে দেওয়ার পর দেশজুড়ে মানুষের কাছে মোদির বিরুদ্ধে যোগ্য ব্যক্তিত্বকে খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়ছিল।
কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের পর মোদির বিরুদ্ধে বিরোধী দলের প্রধান মুখ হয়ে উঠেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যে কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধি সহ বিজেপি বিরোধী দলের শীর্ষ নেতৃত্ব মোদি বিরোধী মুখ হিসেবে আগামী লোকসভা কেন্দ্রে মমতাকে তুলে ধরতে চেয়েছেন। মমতার কাছেও সেই সুযোগ এসেছে দেশের কাছে তার নেতৃত্বকে তুলে ধরার। তবে, এই প্রথম বাংলার কোনও নেতা-নেত্রী সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বিরোধীদের প্রধান মুখ হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি করেছেন তা নয়। এর আগে প্রণব মুখোপাধ্যায় ও জ্যোতি বসু প্রায় তেমনভাবে নিজেদেরকে তুলে ধরার সুযোগ পেয়েছিলেন। কংগ্রেসের ভুলে যেমন প্রণব মুখোপাধ্যায়কে রাষ্ট্রপতি করে সেই সুযোগ নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, তেমনি সিপিএম-ও জ্যোতি বসুকে প্রধানমন্ত্রী করার ব্যাপারে না করে ঐতিহাসিক ভুল করেছে। বলা যায়, বাঙালি প্রধানমন্ত্রী করতে না দিয়ে একপ্রকার অন্যায় করেছে। সেই অন্যায় আর দেখতে চায় না বাংলা তথা দেশ। চায়, মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় হয়ে উঠুক প্রধানমন্ত্রী, হ্যাঁ প্রথম বাঙালি প্রধানমন্ত্রী।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct