জয়প্রকাশ কুইরি, পুরুলিয়া: জাতি ধর্ম বর্ণ এসমস্ত কিছুকে তোয়াক্কা না করে পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলে আব্দুল ও সমর নামে এই দুই জন ব্যক্তি এখন সমজের চোখে মাসিহা বা ভগবান। যে কোন ধর্মের মানুষ তাদের কাছে যে রকম ভাবে সাহায্য পেতে চান তারা নিজেদের সামর্থ মতো সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন একেবারেই নিজেদের জীবনের কোন তোয়াক্কা না করেই। ওরা হলেন সমর কান্তি কর্মকার ও আব্দুল রফিক। দুজনেই পেশায় টোটো চালক। কিন্তু করোনা মহামারির এই চরম সংকটের সময় ওদের টোটোই যেন স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে বর্তমানে অ্যাম্বুলেন্স হয়েছে। পুরুলিয়ার জেলার কাশিপুর ব্লক। অ্যাম্বুলেন্স সেখানে অপ্রতুল। অন্যদিকে করোনা ভাইরাসের আক্রান্তের সংখ্যা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে রাজ্যের পাশাপাশি পুরুলিয়া জেলাতেও।
সেখানে ত্রাতার ভূমিকায় সাধারাণ মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছেন দুই টোটো চালক সমর আর রফিক। জানা যায় দুজনেই প্রতিনদিন সাত সকালে পিপিই কীট পরে টোটো নিয়ে বেড়িয়ে পড়েন। রুক্ষ পুরুলিয়ার চরম দাবদহে দিনভর পিপিই কিট পরেই করোনা আক্রান্ত রোগীদের নির্ধিধায় হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার কাজটাই তারা করে থাকেন। প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই মহামারির এই চরম সংকটে তাঁরা পাশে দাঁড়িয়েছেন পুরুলিয়ার সাধারণ মানুষের। দুই টোটো চালকই বর্তমানে পুরুলিয়ার প্রথম সারির করোনা যোদ্ধার তকমা পেতে পারেন। উল্লেখ্য বর্তমানে পুরুলিয়ার তাপমাত্রা ৩০-৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে ঘোরাফেরা করে। তার ওপর রয়েছে প্রবল রোদ। যেখানে হাসপাতালের শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘরেই পিপিই কীট পরে থাকা চরম অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে সেখানে প্রখর রোদ আর প্রবল তাপের মধ্যেই দিনভর দুই করোনা যোদ্ধা পিপিই কীট পরেই থাকেন। তাদের কথায় মানুষের প্রাণ বাঁচানোর জন্য এই টুকু কষ্ট তারা করতেই পারেন। তারা জানিয়েছেন আগেও মরামারির বিরুদ্ধে এভাবেই লড়াই করেছেন তারা ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct