আপনজন ডেস্ক: কদিন আগেই দলের কোচ ব্রেন্ডন রজার্স তাঁকে নিয়ে মুগ্ধতার কথা জানিয়েছিলেন। রোজা রেখেও যেভাবে খেলে যাচ্ছেন লেস্টার সিটির ফরাসি ডিফেন্ডার ওয়েসলি ফোফানা, তাতে রজার্সের মুগ্ধতা জাগারই কথা।
আর পরশু এল ফোফানার মুগ্ধ হওয়ার ক্ষণ। লিগে নিজেদের মাঠে পরশু ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে খেলেছে লেস্টার সিটি। একদিকে ফোফানা তো আছেনই, অন্যদিকে প্যালেসেও এক রোজাদার ফুটবলার ছিলেন—সেনেগালিজ ডিফেন্ডার চিকু কাউয়াতে! দুজনই রোজা রেখে মাঠে নেমেছিলেন। কিন্তু ম্যাচ শুরু হওয়ার আধা ঘণ্টা পর তাঁদের ইফতারের সময় হয়ে যায়। সে সময় দুজনকে ইফতারের সুযোগ করে দিয়েছে লেস্টার ও প্যালেস।
দুজনকে পানীয় ও এনার্জি জেল (শরীরে শক্তি জোগানো খাবার) খেয়ে রোজা ভাঙার জন্য ম্যাচের ৩৩ মিনিটের সময় হঠাৎ বিরতি দেওয়া হয়। লেস্টারের ২-১ গোলে জয়ের ম্যাচ শেষে প্যালেসকে সে জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন ফোফানা। ধারণা করা হচ্ছে এবারই প্রথম ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের কোনো ম্যাচে ইফতারের জন্য বিরতি দেওয়া হলো। পবিত্র রমজান মাসে অনেক ফুটবলারই রোজা রেখে খেলা চালিয়ে যান। লিভারপুলের মোহামেদ সালাহ, সাদিও মানেদের রোজা রেখে খেলার খবর এর আগে বেশ শিরোনামে এসেছিল। বিশেষ করে ২০১৮ চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালের আগে, সেবার রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে লিভারপুলের ফাইনালটা ছিল রোজার সময়েই! সালাহ ও মানে রোজা রেখে কীভাবে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালের মতো ম্যাচ খেলবেন, তা নিয়ে অনেক আলোচনা উঠেছিল। দুজন সেদিন রোজা রেখেই খেলেছিলেন।
সালাহ-মানের মতো ইউরোপের ফুটবল মাতানো মুসলিম ফুটবলারের সংখ্যা তো কম নয়! ফোফানা-কাউয়াতেরাও রোজা রেখেই খেলেন। ইংল্যান্ডের লেস্টারে পরশু তাঁদের ম্যাচ যখন শুরু হয়, স্থানীয় সময় অনুযায়ী ইফতার হতে তখনো আধা ঘণ্টার মতো বাকি।
ম্যাচের আগে দুই দলের অধিনায়কই ঠিক করে রেখেছিলেন, ফোফানা-কাউয়াতের ইফতারের সময় হলে ম্যাচে তাঁরা বিরতি নেবেন। সূর্য ডোবার পর বল যখন মাঠের বাইরে যাবে, তখনই বিরতিটা নেওয়া হবে—এই ছিল পরিকল্পনা। এরপর ম্যাচের ৩০ মিনিটের সময় দেখা গেল মনে দোলা দিয়ে যাওয়া সুন্দর দৃশ্যটা।
গোল কিক পেয়েছিল প্যালেস। ততক্ষণে সূর্য ডুবে গেছে, ফোফানা-কাউয়াতের ইফতারের সময় হয়ে গেছে। বল বাইরে যাওয়ার পর প্যালেসের গোলকিপার ভিসেন্তে গুয়াইতা তাই সময় নিলেন। বিরতি দিলেন খেলায়। সাইডলাইনে গিয়ে তখন পানি ও এনার্জি জেল খেয়ে নেন ফোফানা-কাউয়াতে। এরপর প্রথমার্ধের বিরতির সময় তো আরও কিছু খেয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেনই।
এর আগে ওয়েস্ট ব্রমের বিপক্ষে লেস্টারের ম্যাচে ফোফানার রোজা রাখার ব্যাপারটি প্রথম আলোচনায় আসে। সেদিনও এমন সন্ধ্যার আগে শুরু হওয়া ম্যাচে নেমেছিলেন ফোফানা, ইফতার করেছেন ম্যাচের বিরতির সময়। কিন্তু বেশি কিছু খেয়ে তো মাঠে দৌড়ানো যায় না, সে কারণে বিরতিতে খুব বেশি কিছু খেতেও পারেননি। সে কারণে সেদিন ফোফানাকে ম্যাচের ৬০ মিনিটে তুলে নেন লেস্টার কোচ রজার্স। রোজা রেখে ফোফানার এভাবে খেলে যাওয়া নিয়ে মুগ্ধতাও জানিয়েছিলেন লিভারপুলের সাবেক কোচ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct