কুতুবউদ্দিন মোল্লা, হাবরা: গত প্রায় তিনমাস আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেনি বছর ঊনিশ বয়সের মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক রুহুল আািন মল্লিক। তার বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাবরা থানার অশোকনগর এলাকায়। পরিবারের লোকজন খুব বেশি খোঁজাখুঁজি না করেই নিখোঁজ রুলামিন সম্পর্কে খোঁজখবরের ব্যপারে একেবারেই হাল ছেড়ে দিয়েছিল।
মানসিক ভারসাম্যহীন ওই যুবক তালদির চাঁদখালি গ্রামে হাজির হয়। সেখানেই মানসিক ভারসাম্যহীন ভবঘুরে ওই যুবক ঘুরতে থাকে। ওই যুবককে ঘুরতে দেখে স্থানীয় যুবক শুভঙ্কর মন্ডল। ভবঘুরে যুবকের কাছে জানতে চায় তার পরিবারে ঠিকানা। ভবঘুরে যুবক উত্তর দেয় ‘আমাকে খেতে দিবি,খুব খিদে পেয়েছে’। সেই মুহূর্তে ভবঘুরের প্রতি মায়া জন্মায় শুভঙ্করের। অপেক্ষা না করে সেই মুহূর্তে নিজের বাড়িতে হাজির হয়। সে তার মায়ের কাছ থেকে তার ভাগের ভাত নিয়ে চলে যায় ভবঘুরে যুবকের কাছে। তাকে আদরযত্ন করে খেতে দেয়। খাওয়া শেষে তাকে নিয়ে যায় স্থানীয় একটি ক্লাবে। সেখানেই থাকার বন্দোবস্ত করে। শুভঙ্করের এমন মানবিকতা দেখে পাড়ার গৃহবধূ চন্দনা, সুলতা, যমুনা’রা দুবেলা খাওয়াদাওয়া, স্নান করান ভবঘুরে যুবকের। এককথায় রুহুল আমিন মল্লিক কয়েক দিনের মধ্যে চাঁদখালি এলাকার হিন্দু পরিবারদের কাছে কাছে আত্মীয় হয়ে উঠেছিল। রুহুল আমিন যাতে বাড়িতে ফিরতে পারে তার জন্য শুভঙ্কর র প্রতিবেশী এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা “ছায়াতট”-এর দাদাদের কে ঘটনার কথা জানায়। ছায়াতটের সদস্য সৌমেন মন্ডল, সংগ্রামজিৎ বিশ্বাস, সুজিত নস্কর, শ্রীমন দে, রাম দেবনাথ’রা দুতিন দিন ভবঘুরে যুবকের সাথে কথা বলার পর তার নাম ও বাড়ির উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। সেই ঠিকানা আর যুবকের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলে ভবঘুরের প্রতিবেশী এক যুবক বিট্টু মণ্ডল ছায়াতটের সদস্যরা ফোনে যোগাযোগ শুরু করেন। এরপর রবিবার বিকালে রুহুল আমিনের পরিবারের তার সৎ মা রোজিনা খাতুন ও নিকট এক আত্মীয় হাজির হন চাঁদখালি গ্রামে। রুলামিন এর নতুন পোশাক পরিচ্ছদ কিনে দিয়ে তাকে তার পরিবারের হাতে তুলে দেন ছায়াতটের সদস্য সহ শুভঙ্কর মণ্ডল।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct