আপনজন ডেস্ক: রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ হয়ে উঠছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদিও জনসবায় দাবি করেছিলেন এই করোনা বৃদ্ধির জন্য দায়ী বিজেপির বহিরাগত নেতারা। তাই নির্বাচন কমিশনকে বলেছিলেন, তারা যেন বহিরাগতদের বাংলায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কমিশন অবশ্য তাতে আমল দেয়নি। তাই রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এবার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাতে কেন্দ্র করোনা ভ্যাকসিনের জোগান ঠিকমতো দেয়। মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে লেখা সেই চিঠিতে ভ্যাকসিন জোগান বাড়ানো এবং নিয়মিত করার দাবি জানান। একই সঙ্গে করোনার চিকিৎসায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রেমডেসিভির জোগান বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ সেই সঙ্গে অক্সিজেনের সরবরাহে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেই বিষয়টি দেখার জন্যও অনুরোধ জানানো হয়। রাজ্যের কাছে এই সকল ওষুধের মজুত না থাকায় প্রধানমন্ত্রীর শরণাপন্ন বলে জানা গেছে। যদিও এর আগে এ ব্যাপারে চিঠি লিখেও কোনও সাড়া মেলেনি অভিযোগ মমতার। তার অভিযোগ, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন তিনি। মমতা দাবি করেছিলেন, রাজ্যের সমস্ত মানুষকে বিনামূল্যে টিকা দিক সরকার।
তাতে বলা হয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার যে ভ্যাকসিন সরবরাহ করছে তা সংখ্যায় অপর্যাপ্ত এবং জোগানও অনিয়মিত। ফলে রাজ্য করোনা ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে তেমন অগ্রগতি হয়নি।
মমতা তার চিঠিতে লেখেন, ‘আমাদের ৬,০০০ ভায়ালের মতো রেমডেসিভির এবং ১,০০০ ভায়াল টসিলিজুম্যাবের প্রয়োজন আছে। তবে আপাতত দৈনিক আমাদের হাতে মাত্র ১,০০০ ভায়াল থাকছে। আর টসিলিজুম্যাব আর আসছে না।’
কলকাতায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণ দু হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তাই কলকাতা নিয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী তার চিঠিতে উল্লেখ করেন এই শহরের কথা। মমতা চিঠিতে এ বিষয়ে লেখেন, ‘কলকাতার মতো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় দ্রুত হারে এবং নির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী টিকাকরণ চালানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ভ্যাকসিনের সরবরাহ অপর্যাপ্ত এবং অনিয়মিত৷ যার ফলে আমাদের রাজ্যের ভ্যাকসিন কর্মসূচিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে৷ আমাদের আরও ২.৭ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে হবে, তার জন্য ৫.৪ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন প্রয়োজন৷ রাজ্য যাতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভ্যাকসিন পায়, তার জন্য অবিলম্বে আপনাকে হস্তক্ষেপ করতে অনুরোধ করছি’।
তাই মমতা রেমডেসিভির ও টসিলিজুম্যাব এই দুটিরই জোগান দেওয়ার জন্য অনুেোধ করেন প্রধানমন্ত্রীকে। সেই সঙ্গে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা সেল-এর নিয়মিত অক্সিজেন সরবরাহ করছে রাজ্যে। তার যেন অব্যাহত থাকে, তা নিশ্চিত করারও অনুরোধ জানানো হয়। তবে করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্রকে সব রকম সাহায্যে তৈরি রাজ্য সরকার প্রস্তুত বলেও জানান মমতা।
যদিও এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কোনও উত্তর এখনও পাওয়া যায়নি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct