আপনজন ডেস্ক: করোনা সংক্রমণ আবার ভয়াবহ আকার নিতে শুরু করেছে ইমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁর দেশ ফ্রান্সে। ইতিমধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে ফ্রান্সে মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। সব শেষ নতুন করে করোনা আক্রান্ত ৩০০ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত এ মাইলস্টোন পার করেছে ফ্রান্স। ফ্রান্সের আগে ইউরোপের আরও দুটি দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ছাড়িয়েছে। দেশ দুটি হলো ব্রিটেন ও ইতালি।
করোনা ভাইরাসের প্রাণ হারানো প্রত্যেকের স্বজনের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ একটি টুইট করেছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, এ ভাইরাসে প্রাণ হারানো একটি নাম, একটি মুখও আমরা ভুলবো না।
করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩ কোটি ২২ লাখ ২৪ হাজার ১৩৯ জন করোনায় আক্রান্ত এবং ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৯৯৩ জন মারা গেছেন। লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর দিক দিয়ে তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।
২০২০ সালের মার্চের মাঝামাঝি থেকে মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময়ে করোনা ভাইরাসের প্রথম ঢেউয়ে ফ্রান্সে প্রায় ৩০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। তবে মৃত্যুর ওই মিছিল অক্টোবর পর্যন্ত চলে। এরপর ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা ২০২০ সালের শেষদিক পর্যন্ত চলে। আর বর্তমানে দেশটিতে চলছে করোনা ভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ। এখন ৫ হাজার ৯০০-এর বেশি মানুষ ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।
ফ্রান্সে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের জন্য দেশটির সরকার যুক্তরাজ্যের একটি ভ্যারিয়েন্টকে (ধরন) দায়ী করে আসছে। এ ছাড়া ব্রাজিলে যে ভ্যারিয়েন্ট তাণ্ডব চালাচ্ছে ফ্রান্সে সেটির বিস্তার ঠেকাতে ব্রাজিলের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে ফ্রান্স।
দেশটিতে করোনা ভাইরাসের তৃতীয় ঢেউয়ের জন্য বিরোধীরা ম্যাক্রোঁকে দায়ী করছেন। তাদের অভিযোগ, জানুয়ারির শেষ দিকে চিকিৎসকরা যখন আবার লকডাউন দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলেন ম্যাক্রোঁ তা আমলে নেননি।
তবে এপ্রিলের ৩ তারিখে এসে নতুন করে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেন ম্যাক্রোঁ, যিনি আগামী বছর হতে যাওয়া দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আবারও লড়তে চান।
এছাড়া টিকাদানে ধীরগতির অভিযোগ রয়েছে ফ্রান্সে। বলা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেনসহ আরও অনেক দেশের চেয়ে টিকা দানে অনেক পিছিয়ে রয়েছে ফ্রান্স।
ব্রিটেন যেখানে এরইমধ্যে ৪ কোটির বেশি ডোজ টিকা দিয়ে ফেলেছে ফ্রান্স সেখানে দিয়েছে কেবল দেড় কোটির কিছু বেশি ডোজ। ফ্রান্স সরকার প্রথমে প্রবীণদের টিকার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। টিকাদানে গতি বাড়াতে দেশটি জনসনের টিকার দিকে তাকিয়ে আছে।
তবে রক্তজমাটের আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে যুক্তরাষ্ট্র জনসনের টিকা ব্যবহারের সিদ্ধান্ত বাতিল করলে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে তাদের টিকা প্রয়োগের জন্য আসতে আরও সময় লাগবে। এতে ফ্রান্সের সংকট আরও বেড়েছে। এরআগে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়েও এই রক্তজমাটের ব্যাপারটি আলোচনায় আসে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct