আপনজন ডেস্ক: এলেন, দেখলেন, জয় করলেন। হ্যাঁ, এই কথাটি এখন প্রযোজ্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে। তিনি শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে নিহত চারজন মুসলিমরে পরিবারের বাড়িতে গেলেন। এক নিহতের তিন মাসের শিশুকন্যাকে নিজের কোলে নিয়ে মাতৃস্নেহ করে জয় করলেন শীতলকুচিতে নিহতদের পরিবারের মন। ধর্মীয় গণ্ডিকে দূরে ঠেলে দিয়ে ব্রাহ্মণের কোলে দোলে মুসলিম শিশু। মমতা নিহত মণিরুলের স্ত্রীর কাছ থেকে ছোট্ট শিশুকে কেড়ে নিযে নিজের কোলে নিয়ে নেন। স্নেহ করতে থাকেন। সেই শিশু ভাইরাল হয়ে ওঠে। উল্লেখ্য, শীতলকুচিতে ভোট চলাকালীন বাহিনীর গুলিতে চারজন নিরীহ ভোটারের মৃত্যুর পর তাদের সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই এর পেছনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের হাত আছে বলে অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলি চালানোকে গণহত্যার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। তারপর তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি সহানূভুতি জানাতে তাদের বাড়িতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু বাদ সাধে নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে মন্তব্য করার দায়ে নির্বাচন কমিশন ৪৮ ঘণ্টা নির্বাচনী প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
ফলে, মমতার শীতলকুচি সফর আটকে যায়। তিনি শীতলকুচির নিহতদের পরিবারের কাছে যাওয়ার জন্য উত্তরবঙ্গে পৌঁছলেও নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞায় আর যাওয়া হয়ে ওঠেনি।
বাধ্য হয়ে তিনি ভিডিও কলে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন মমতা। এবার নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হতেই বুধবার শীতলকুচিতে নিহতের বাড়িতে গেলেন। রক্ষা করলেন প্রতিশ্রুতি। সেই সঙ্গে বললেন, গুলি চালনার ঘটনায় সিআইডি তদন্ত হবে।
শুধু শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে নিহত চারজনের পরিবারের সঙ্গে নয়, দুষ্কৃতিতের গুলিতে নিহত আনন্দ বর্মনের দাদু ও মামার সঙ্গেও তিনি দেখা করেন। মমতা আশ্বাস দেন দোষী ব্যক্তির সাজা হবে। ঘটনার তদন্ত হবে।
অন্যদিকে এদিন মমতা অমিত শাহের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। মমতা বলেন, ভুরি ভুরি মিথ্যা কথা। ওরা এনআরসি নিয়ে বিল পাস করেছে। এখন বলছে কবে হবে সেটা ঠিক হয়নি। সব ভাঁওতা। সবাই দেশের নাগরিক। কোনওভাবেই এনআরসি চালু করতে না দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন মমতা। সেই সঙ্গে বলেন, শীতলকুচিতে গণহত্যা করেছে ওরা। তারপর আমি যাব বলতেই কমিশন নিষেধাজ্ঞা জারি করে দিল। আমি শীতলকুচিতে ঢুকতে পারলাম না। আপনারা এর বিচার করবেন। সিআরপিএফের এসব ক্ষেত্রে কোমরের নিচে গুলি করার কথা। কিন্তু ওরা বুকে গুলি মেরেছে। ন্যায্য বিচারের প্রয়োজন। দোষীদের শাস্তি হবেই। মুখ বুঝে থাকব না।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct