রফিকুল হাসান, কলকাতা: আব্বাস সিদ্দিকী প্রতিষ্ঠিত আইএসএফ দলে নাম লেখাতে পারেন রাজ্যের অন্যতম সংখ্যালঘু নেতা মুহাম্মদ কামরুজ্জামান। এমন খবর প্রকাশের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় জোর চর্চা শুরু হয়েছে। শুধু তাই নয় উত্তর 24 পরগনার দেগঙ্গা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বাম, কংগ্রেস সমর্থিত আইএসএফ দলের হয়ে ভোটে দাঁড়াতে পারেন কামরুজ্জামান। এই খবর আপনজন পত্রিকার নিউজ পোর্টালে প্রকাশের পর মঙ্গলবার দিনভর সোশ্যাল মিডিয়ায় জোর তরজা শুরু হয়েছে। কমেন্ট, পাল্টা কমেন্টে রাজনৈতিক পারদ চড়তে থাকে। কিন্তু যাকে নিয়ে এত জোর চর্চা কে সেই মুহাম্মদ কামরুজ্জামান? আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি উত্তর 24 পরগনার দেগঙ্গা বিধানসভার ভূমিপুত্র মুহাম্মদ কামরুজ্জামান। ছাত্রজীবন থেকেই যেন তার রক্তে মিশে গেছিল আন্দোলন-সংগ্রাম। কলকাতার আলিয়া মাদ্রাসায় পড়ার সময় থেকে ছাত্র আন্দোলনে জড়িয়ে পড়া। সংগঠক হিসেবে হাতে খড়ি পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা ছাত্র ইউনিয়নের মাধ্যমে। মাদ্রাসা ছাত্র ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদক হিসাবে সুনামের সঙ্গে কাজ করে বাম জমানায় তার নেতৃত্বে গঠিত নানা আন্দোলন তৎকালীন রাজ্য রাজনীতিতে সাড়া ফেলে দিয়েছিল। পড়াশোনা শেষ করে ছাত্র রাজনীতি থেকে সরে এসে নিজ হাতে প্রতিষ্ঠা করেন সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন নামে একটি গণসংগঠন। রাজ্যের পিছিয়ে পড়া সংখ্যালঘু সমাজের নানাবিধ সমস্যা নিয়ে তার নেতৃত্বে সংঘটিত গণআন্দোলন সাক্ষী থেকেছে কলকাতা। শুধু কোলকাতা নয় গোটা বাংলায় বিস্তার লাভ করেছে সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন এর শাখা। সেই সুবাদে তিনি সংখ্যালঘু সমাজের এক অন্যতম মুখ হয়ে উঠেছেন।
সম্প্রতি ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী রাজনীতির ময়দানে নামায় জোর চর্চা শুরু হয়েছে। তার রাজনীতিতে নামা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে বাক্য বিনিময় হয়েছে। এবার সেই চর্চায় জুড়ে গেল মুহাম্মদ কামরুজ্জামান এর নাম। তিনিও নাকি মনেপ্রাণে চাইছেন পিছিয়ে পড়া মানুষের আশানুরূপ উন্নয়ন করতে গেলে মাঠে ময়দানে নয় বিধানসভা, লোকসভায় পিছিয়ে পড়া মানুষের প্রতিনিধিত্ব থাকা দরকার। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি এমনটাই প্রকাশ করে রাজনীতিতে পা মেলানোর পক্ষে সওয়াল করেছেন। এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, কামরুজ্জামান দক্ষ সংগঠক রাজনীতিতে এলে খুবই ভালো হবে। আবার কেউ লেখেন, না এটা ফেক নিউজ। কেউ বলেছেন, ওনার সঙ্গে একটু আগে কথা বলেছি। উনি বলেছেন এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। এই সমস্ত কমেন্ট পাল্টা কমেন্টে যখন সরগরম সোশ্যাল মিডিয়ার রাজনীতি সে সময় আমরা সরাসরি কথা বলার চেষ্টা করেছি রাজ্যের অন্যতম সংখ্যালঘু নেতা তথা সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের রাজ্য সম্পাদক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান এর সঙ্গে। তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, আমি রাজনীতিতে নামলে প্রেস মিট করে সকলকে জানিয়েই নামবো। রাজনীতি তো আর খারাপ কিছু নয়। আব্বাস সিদ্দিকীর মনে হয়েছে, উনি যেটা ভালো বুঝেছেন। উনি ওনার মতো রাজনীতি করছেন। আমার রাজনীতি করার ইচ্ছা থাকলে আমি নিজে অনেক আগেই রাজনীতিতে নামতাম। তবে হ্যাঁ এটা ঠিক বিধানসভা, লোকসভায় পিছিয়েপড়া মানুষদের নিজস্ব প্রতিনিধি থাকা দরকার। কেননা, আমরা যাদের উপর আস্থা রেখে জনপ্রতিনিধি হিসেবে পাঠাচ্ছি, তাঁরা আমাদের কথা সঠিকভাবে তুলে ধরেন না বলে হতাশা ব্যাক্ত করেন কামরুজ্জামান। তবে এই নির্বাচনে সংখ্যালঘুরা কোন দলকে ভোট দেবেন? এই প্রশ্নের জবাবে কামরুজ্জামান বলেন, যেকোনো মূল্যে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে আমাদের রুখতে হবে। তবে এটা ঠিক এমন কাউকে ভোট দিলাম, আর ভোটে জয়ী হয়ে মানুষকে ধোকা দিয়ে অন্য দলে নাম লেখাবেন। সেটা হবে না। মানুষ ঠিক করুক, যাঁর দ্বারা প্রকৃত উন্নয়ন হবে। নিরাপত্তা থাকবে। জনগণ তাঁদেরকেই নির্বাচিত করুক। এমনটাই মত কামরুজ্জামানের। কবে ফুরফুরা শরীফে যাচ্ছেন? এ ব্যাপারে কামরুজ্জামান বলেন, গেলে জানাবো। ফুরফুরা শরীফ একটি পবিত্র তীর্থস্থান। দোয়া নেওয়ার জন্য এর আগেও গিয়েছি এবং আগামীতেও যেতে পারি। আব্বাস সিদ্দিকীর সঙ্গে দেখা করবেন? শুধু আব্বাস সিদ্দিকী কেন, আরো পীরসাহেব, পীরজাদারা আছেন। অনেকের সঙ্গে খুব সুসম্পর্ক। দোয়া নিতে যেতেই পারি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct