এহসানুল হক ও জুলফিকার মোল্যা, বসিরহাট: প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ তৃণমূল সমর্থিত কর্মীরা। টাকি রোডে দফায় দফায় অবরোধ গাছের গুড়ি টায়ার জ্বালিয়ে তৃণমূলের প্রার্থী বদলের দাবিতে সোচ্চার হন তারা।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চরম অস্বস্তির মধ্যে পড়েছে তৃণমূল। শুক্রবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাট মহকুমার বসিরহাট উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রে। এদিন দুপুরে কালিঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি থেকে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেন। সেই তালিকায় বসিরহাট উত্তরে নাম আসে সিপিএম থেকে আসা রফিকুল ইসলাম মন্ডলের। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই বসিরহাট উত্তরের মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভে দেখাতে থাকেন। কয়েকশো বিক্ষোভকারী টাকি রোডে টায়ার জ্বলিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। বিক্ষোভের কারণে রাজ্য সড়ক টাকি রোডে ব্যাপক যানজট শুরু হয়। এলাকার মানুষের দাবি, এবার যাকে প্রার্থী করা হল তিনি প্রথমে তৃনমূলে থাকলেও টিকিটের লোভে সিপিএম এ গিয়ে বিধায়ক হয়। সম্প্রতি আবার সিপিএম থেকে তৃনমূলে যোগ দিয়েছেন।
উল্লেখ, বসিরহাট মহাকুমার বসিরহাট উত্তর বিধানসভা ২০২১ এ তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছে রফিকুল ইসলাম। সিপিএম থেকে তৃণমূলে যোগদান করেছিলেন। ১৯৯৮ সাল থেকে তৃণমূল কংগ্রেস দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একই মঞ্চে থাকতেন। ২০১৬ সালে তৃণমূল প্রার্থী দাবিদার ছিলেন। কিন্তু দল সেদিনকে রফিকুল ইসলাম মণ্ডলকে প্রার্থী করিনি । সিপিএমের যোগদান করেছিলেন জোটের প্রার্থী হয়ে তৃণমূলের এটি এম আব্দুল্লাহ রনিকে ৪৯৮ ভোটে হারিয়ে দিয়েছিলেন।
কয়েক মাস আগে তৃণমূলে যোগদান করে তাকে বসিরহাট উত্তর বিধানসভা তৃণমূলের প্রার্থী করেছে দল। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি যে গত পাঁচ বছর ধরে এলাকায় তৃণমূলের সংগঠন করে আসছে এটিএম আব্দুল্লাহ রনি সেই টিকিটের ন্যায্য দাবিদার। তাই প্রার্থী ঘোষণা হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে তৃণমূলের একাংশ তারা মাটিয়া থানার ধান্যকুড়িয়া নেহালপুর টাকি রোড এ দফায় দফায় গাছের গুঁড়ি ও টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ শুরু করেন।
স্থানীয় তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা বিক্ষোভ অবরোধ চালাচ্ছে তৃণমূল নেতা-কর্মী সমর্থকরা ঘটনাস্থলে মাটিয়া থানার পুলিশ যায়। এই ঘটনায় ওই এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এই অবরোধের ফলে প্রচুর যানবাহন রাস্তায় আটকে থাকে। অন্যদিকে কিছু মানুষের অভিযোগ, আমফান বা কোভিডকালে রফিকুল ইসলাম মন্ডলকে কখনোই দেখা যায়নি। এমনকি মানুষের সমস্যায় তিনি নাকি কখনও পাশে দাঁড়ান না। তাদের দাবি এলাকায় সকলের প্রিয় এটিএম আবদুল্লা ওরফে রনি। দুইবার সে বিধানসভা ভোটে হারলেও সেই তাদের ঘরের ছেলে। আপদে বিপদে সে মানুষের পাশে দাঁড়ায়। তাকেই প্রার্থী করা উচিত ছিল বলে বিক্ষোভকারীদের দাবি। প্রার্থী তালিকা ঘোষণার রেষ কাটতে না কাটতে প্রার্থী নিয়ে এই অসন্তোষে জেলা তৃণমূলের কপালে ভাঁজ পড়ল বলেই দাবি রাজনৈতিক মহলের। উত্তর ২৪ পরগনায় বেশকিছু নতুন মুখ দেখা গেছে শাসক দলের এই তালিকায়। স্বাভাবিক কারণেই বিক্ষোভের রেশ ভোটবাক্সে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা শাসক দলের নেতাদের।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct