আপনজন ডেস্ক: অবশেষে এ রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে বামফ্রন্টের জোট বেঁধে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করার সবুজ সংকেত মিলল কংগ্রেস হাইকমান্ড সোনিয়া গান্ধির কাছ থেকে। এর ফলে, রাজ্যে বিজেপিকে রুখতে তৃণমূলের সঙ্গে এই জোটও উঠেপড়ে লাগার উৎসাহ পেল।
সোনিয়া গান্ধির কাছ থেকে এই সুসংবাদ পেয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা কংগ্রেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরি সোশ্যাল মিডিয়া ট্যুইটারে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে লিখেলেন, ‘বামেদের সঙ্গে নির্বাচনী জোটে বৃহস্পতিবার সম্মতি দিয়েছে কংগ্রেস হাইকমান্ড।’ বামেদের সঙ্গে জোট বাঁধা নিয়ে হাইকমান্ডের সবুজ সংকেত পেয়ে নতুন উদ্যোমে জোটকে এগিয়ে নিতে চান অধীর। উল্লেখ্য, এর আগে কংগ্রেসের সঙ্গে বিধানসভা ভোটে জোট বাঁধার ব্যাপারে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি তাদের সম্মতির কথা জানিয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেস হাইকমান্ড তা নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু না বলায় তা নিয়ে এগোতে পারছিলেন না অধীর সহ প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা।
কংগ্রেস হাইকমান্ডের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে সিপিএম। সিপিএমের পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী এ সংম্পর্কে সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, এআইসিসির সিদ্ধান্ত রাজ্যে বিজেপি ও তৃণমূল-বিরোধী আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে। মাসক দল ও বিজেপি যে রাজ্যের সর্বনাশের মূলে। তাই বাংলার স্বার্থে এই জোট তৃণমূল ও বিজেপিকে পরাস্ত করবে।
কংগ্রেস হাইকমান্ডের এই সায় পাওযার পর কীভাবে বামেদের সঙ্গে যৌথ কর্মসূচি নিয়ে নির্বাচনী প্রচারে নামা যায় তার পরিকল্পনা করতে শুরু করে দিয়েছেন অধীর। তবে, এই জোটের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী কে তা নিয়ে এখনই কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে, জেলা থেকে কংগ্রেসের তরফে ইতিমধ্যে জোটের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে অধীরের নাম প্রস্তাব করতে শুরু করে দিয়েছে। অবশ্য এ প্রসঙ্গে বামেদের তরফে কোনও মন্তব্য মেলেনি।
উল্লেখ্য, ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা ছিল ৪৪ আর বামেদের ৩২। কিন্তু তারপর জল অনেক দূর গড়িয়েছে। কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের বহু নির্বাচিত বিধায়ক দল ছেড়ে হয় তৃণমূল কংগ্রেস নয় বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন। তারপর লোকসভা নির্বাচনে বাম কংগ্রেস জোট বেঁধে নির্বাচনে লড়রেও তেমন সাফল্য মেলেনি। এবার বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষিত যেহেতু আলাদা তাই কোমরবেঁধে নেমে পড়তে চায় বাম ও কংগ্রেস।
কংগ্রেস ও বামেদের একটি মহলের দাবি, লোকসভা নির্বাচনে অনেক মানুষ তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানাতে বিজেপিকে ভোট দিয়েছে। কিন্তু তারা বিধানসভা নির্বাচনে মুখ ফিরিয়ে নেবেন বলেই তাদের আশা। যেভাবে কেন্দ্রীয় সরকার নানা জনবিরোধী নীতি নিয়ে চলেছে তাতে অবশেষে রাজ্যের মানুষ কংগ্রেস ও বাম জোটের পক্ষে যাবে বলে কং জোটের নেতাদের বিশ্বাস। কিন্তু বাস্তবে কতটা সফল হবে তা অবশ্য নির্বাচন না এলে বোঝা মুশকিল। তবে, এর ফলে একটা বিষয় পরিষ্কার হয়ে গেল রাজ্যে তৃণমূল, বিজেপি ছাড়াও তৃতীয় পক্ষ হিসেবে বাম কংগ্রেস জোট বিধানসভা নির্বাচনে বিশেষ ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারে।
কংগ্রেসের একটি মহলের ধারণা, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বাম কংগ্রেস জোট ক্ষমতায় আসতে না পারলেও সরকার গড়ার ক্ষেত্রে নির্ণায়ক ভূমিকা নেবে। কারণ, তাদের মতে এবার এককভাবে কি তৃণমূল কি বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। সেক্ষেত্রে এই জোটের উপরই সরকার গড়ার ভাগ্য ঝুলে থাকবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct