আপনজন ডেস্ক: এতদিন চিনে উইঘুর মুসলিমদের ধর্মীয় আচারবিধির উপর নানা নিষেদাজ্ঞা চাপিয়ে এসেছ চিন। এবার তাদের নিশানায় চলে আসছে খ্রিস্টান সহ অন্য দেশের বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীরা। কোনও দরনের ধর্মীয় গোঁড়ামি দেখলেই এবার বিদেশিদের বিরুদ্ধেও কড়া ব্যবস্তা নেবে চিন। চিনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের তরফে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে বিদেশি ধর্মীয় গোষ্ঠী এবং উপাসকদের বিরুদ্ধে আগামীতে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে। সম্প্রতি প্রকাশিত খসড়া বিধিমালাতে 'ধর্মীয় উগ্রবাদ'-এর বিস্তার রোধে বিদেশি উপাসকদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে নতুন বিধিনিষেধের আহ্বান জানিয়েছে দেশটির বিচার বিভাগ। শি'র অধীনে ধর্মীয় অনুশীলন নিয়ন্ত্রণের সর্বশেষ পদক্ষেপ হল, নতুন নিয়মগুলি বর্তমানে জনসাধারণের মতামতের জন্য উন্মুক্ত আছে তবে তাদের বর্তমান নিয়ম গঠনে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
চিন কমিউনিস্ট শাসিত রাষ্ট্র হলেও সেখানে পাঁচটি ধর্মের স্বীকৃতি রয়েছে। সেই এই ধর্মগুলি হল চাইনিজ বৌদ্ধধর্ম, তাওবাদ, ইসলাম, ক্যাথলিক ধর্ম, প্রোটেস্ট্যান্টিজম। এই গোষ্ঠীগুলির ধর্ম পালনে বাইরেও তাদের দৈনন্দিন কার্যকলাপ গুলিও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।এছাড়াও সরকারীভাবে স্বীকৃত নয় এমন অনেক বিশ্বাস যেমন মরমোনবাদ, ইহুদী ধর্ম, কোয়েকারস-চিনে পরিচালনা করতে সক্ষম হয়েছে। যা বিদেশীদের ক্ষেত্রে সাধারণত আরও বেশি স্বাধীনতা রয়েছে। বিদেশী ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলির প্রতি সংবেদনশীলতা এখনও প্রবল রয়েছে চিনে।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে প্রকাশিত একটি বইতে পোপ ফ্রান্সিস প্রথমবারের মতো উইগার্সকে 'নির্যাতিত মানুষ' হিসাবে উল্লেখ করেছেন। মঙ্গলবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে চিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বলেন, উইঘুরদের সম্পর্কে পোপ ফ্রান্সিস যা বলেছেন তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। "চিনে ৫৬ টি নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী রয়েছে এবং উইঘুর জাতিগোষ্ঠী চীনা জাতির বৃহত্তর পরিবারের সমান সদস্য। এ বিষয়ে ঝাও আরও বলেন, চিন সরকার সর্বদা সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর সাথে সমান আচরণ করেছে এবং তাদের বৈধ অধিকার এবং স্বার্থ সংরক্ষণ করেছে। এই খসড়ার অন্যান্য অংশগুলি ইসলামী গোষ্ঠীগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করে বলে মনে হচ্ছে, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে জিনজিয়াং এবং চিন জুড়েই তারা প্রচণ্ড চাপের মুখে পড়েছে, সাম্প্রতিক আদমশুমারির তথ্য অনুযায়ী ২৩ মিলিয়ন মুসলমান রয়েছে চিনে।
তবে চিন তাদের নতুন প্রস্তাবে বলছে, কিছু খ্রিস্টান মিশনারিরা চিনে অবৈধভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। নতুন বিধিমালা অনুযায়ী বিদেশী ধর্মীয় অনুশীলনে আশেপাশের অঞ্চলগুলিকে আরও কঠোর নিরাপত্তার আওতায় আনা হতে পারে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct