আপনজন ডেস্ক: গত ফেব্রুয়ারি মাসে উত্তর পূর্ব দিল্লিতে ঘটা ভয়াবহ দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের জন্য এবার উদ্যোগ নিতে দেখা গেল। সম্প্রতি দিল্লি দাঙ্গার ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য নর্থ ইস্ট দিল্লি রায়টস ক্লেমস কমিশন বা এনইডিআরসিসি নতুন অফিস খুলেছে। তারপর এক নোটিশ জারি করে বলেছে, দিল্লি দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপূরণের দাবি জানাতে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আবেদনপত্র জমা দিতে হবে। এই নোটিশ জারি করেছেন এনইডিআরসিসি-র কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সুনীল গৌর।
ক্ষতিপূরণ পাওয়ার এই দাবি জানাতে হবে সম্পূর্ণ অনলাইনে। গুগলে সার্চ করলেই "উত্তর পূর্ব দিল্লি দাঙ্গা দাবি কমিশন ফর্ম" পাওয়া যাচ্ছে। বলা হয়েছে, এই ফর্ম পূরণ করে কাজে দিনে সকাল সাড়ে নটা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত এনইডিআরসিসি রনতুন অফিসে জমা দেওয়া যাবে। এছাড়া, ক্ষতিগ্রস্তরা কমিশনে তাদের ব্যক্তিগতভাবে বা ইমেলের মাধ্যমে (nedrc.commission@delhi.gov.in) অথবা নিবন্ধিত ও গতির ডাক মারফত ফরম জমা দিতে পারবেন।
উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারি মাসেউত্তর-পূর্ব দিল্লি ব্যাপকভাবে মুসলিম-বিরোধী সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় কমপক্ষে যেখানে ৫৩ জন মারা গিয়েছিল এবং প্রায় ৩০০ জন আহত হয়েছিল। কয়েক হাজার মানুষ আক্রান্ত অঞ্চল থেকে বাস্তুচ্যুতও হয়েছিল।
তবে, দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য এর আগেও অনলাইনে আবেদনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু এবারের ফরমে নতুন কিছু শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে।। কমিশন কর্তৃক প্রদত্ত নতুন ফর্মটি ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তির বিষয়ে প্রতি মিনিটে বিশদ জানতে চাইছে, সম্পত্তি জনসাধারণের বা বেসরকারী কিনা, দাবিটি ডিএম অফিস, ডিসিপি অফিস, বীমা কোম্পানীর নিকট বিবেচনাধীন কিনা। কোনও ক্ষতিপূরণ পেয়েছে কিনা? দাবিদার এবং ক্ষতিগ্রস্থ সম্পত্তির বিষয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালতে কোনও মামলা দায়ের করা হয়েছে কিনা।
তাই নতুন এই ফর্ম নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ক্ষতিপূরণ মামলায় দিল্লি হাইকোর্টে ক্ষতিগ্রস্তদের আইনজীবী মিশিকা সিং জানিয়েছেন, ক্ষতিপূরণ দাবি করার এই নতুন পদ্ধতি ক্ষতিগ্রস্থদের আরও বাধা সৃষ্টি করবে। তিনি বলেন, আগে ক্ষতিপূরণের জন্য ফরম জমা দিতে সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। ক্ষতিপূরণের জন্য হাইকোর্টে যেতে হয়। এ বিষয়ে আটটি মামলা করেছি এবং আমাদের আরও মামলা করতে হয়েছে। এখন, কোনও মামলা দায়ের করার আগে আমাদের দাবিগুলির জন্য প্রথমে এনইআরডিসিসিতে যেতে হবে। সমস্যাটি হ'ল আমাদের আবার সমস্ত ফর্ম ফাইল করতে হবে। এতে সময়ের অপচয় হবে। এই কমিশনটি নয় মাস আগে প্রতিষ্ঠিত হওয়া উচিত ছিল।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct