আপনজন ডেস্ক: নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ মসজিদে শ্বেতাঙ্গ হামলার পর নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আর্ডার্ন সেখানে হাজির হন। নিহতদের পরিবারের প্রতি সমমর্মিতা দেখানোর সঙ্গে সঙ্গে আম্বস্ত করেন, তিনি দোষীদে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। কারণ, মুসলিমরাও সে দেশের নাগরিক। তাদেরও দেখার দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী। জাসিন্ডা কথা রেখেছেন। সেই মতো অভিযুক্ত হামলাকাররী বিরুদ্ধে ব্যবস্তা নিয়েছেন। এবার নিউজিল্যান্ডে পুলিমের চাকরিতে মুসলিম মহিলাদের অংশ নিতে উদ্বুদ্ধ করতে হিজার পরার অনুমতি দিল নিউজ্যিলান্ড সরকার। ফলে, নিউজিল্যান্ড পুলিশের সরকারি ইউনিফর্মের সঙ্গে যুক্ত হল হিজাবও।
নিউজিল্যান্ড সরকারের এই অনুমতি লাভের পর সদ্য নিয়োগ পাওয়া পুলিশ কনস্টেবল জিনা আলি হবেন প্রথম পুলিশ কর্মকর্তা, যিনি আনুষ্ঠানিকভাবে তার পোশাকের সঙ্গে হিজাব পরবেন।
এ ব্যাপারে নিউজিল্যান্ড পুলিশের একজন মুখপাত্র জানান, দেশের বহুজাতি গোষ্ঠীর সদস্যদের নিয়ে আরও বিস্তৃত পরিসরে সেবা নিশ্চিত করাই তাদের উদ্দেশ্য। এর ফলে আরো বেশি মুসলমান মহিলা পুলিশ বাহিনীতে যোগ দিতে আগ্রহী হবে বলে তারা আশা করছে।
তবে শুধু নিউজিল্যান্ড নয়, এর আগে ২০০৬ সালে ব্রিটেনের রাজধানী লন্ডনের পুলিশ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, তাদের মহিলা পুলিশ সদস্যরা চাইলে ইউনিফর্মের সঙ্গে হিজাব পরতে পারবে। ২০১৬ সালে একই রকম সিদ্ধান্ত নেয় স্কটল্যান্ডের পুলিশ। ২০০৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়ার মাহা শুক্কুর তার পোশাকের সঙ্গে হিজাব পরেন।
কিন্তু হঠাৎ কেন এই হিজাব পরার অনুমতি তা নিয়ে নিউজিল্যান্ডের পুলিশ জানিয়েছে, সেকেন্ডারি পুলিশ স্কুল পরিদর্শনের পর পুলিশ কর্মকর্তাদের সুপারিশের পর ২০১৮ সাল থেকেই ইউনিফর্মের সঙ্গে হিজাব সংযুক্ত করার ব্যাপারে কাজ শুরু করে। নিজের পোশাকের অংশ হিসাবে প্রথম হিসাব ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছিলেন কনস্টেবল আলি। এরপর এই পোশাকের চালু করার কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার জন্য তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।’
উল্লেখ্য, কনস্টেবল আলি ফিজিতে জন্মগ্রহণ করার পর শিশু অবস্থায় নিউজিল্যান্ডে চলে আসেন। নিউজিল্যান্ড হেরাল্ডের তথ্য অনুযায়ী, ক্রাইস্ট চার্চ সন্ত্রাসী হামলার পরে তিনি পুলিশে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তার পুলিশে যোগ দেওয়া নিয়ে জিনা আলি বলেন, 'আমি উপলব্ধি করতে শুরু করলাম, মানুষকে সহায়তা করার জন্য পুলিশ বাহিনীতে আরও বেশি মুসলমান মহিলাদের অংশগ্রহণ করা উচিত।'নিউজিল্যান্ড পুলিশ বাহিনীতে আমার পোশাকের অংশ হিসাবে হিজাব তুলে ধরতে পারায় আমার খুব ভালো লাগছে।
তিনি আরো বলেন, আমার বিশ্বাস, এটা দেখে এখন আরও বেশি মুসলমান মহিলা পুলিশে যোগ দিতে চাইবেন। তবে এই হিজাব চালূর ক্ষেত্রে বিশাল কৃতিত্ব নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আর্ডার্নের। তিনি আগেই বলেছিলেন, তার দেশে সবাই মিলে দেশকে সুসংহত করে তুলবেন। পুলিশে হিজাবের অনুমোদন সেটারই ফলশ্রুতি বলা যেতে পারে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct