আপনজন ডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টের রায়ে অযোধ্যার বাবরি মসজিদের পরিবর্তে ৫ একর জমি দেওয়ার কথা ছিল সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড। সেই নির্দেশ মতো উত্তরপ্রদেশ সরকার অযোধ্যা থেকে দূরে ৫ একার জমির ব্যবস্থা করে দিয়েছে।বাবরি মসজিদের এই বিকল্পটি জমিটি বাবরি মসজিদ বা রামমন্দির থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে ধন্নিপুর গ্রামে অবস্থিত। লোকালয় থেকে অনেক দূরের এই জমিতে চাষ ছাড়া আর কিছু হয় না। তবে, এই চিহ্নিত কৃষি এলাকার নাধ্যে একটি দরগাহ রয়েছে। আর পুরো ৫ একর জমিতে তুলে দেওয়া হয়েছে সুন্নি বোর্ডের হাতে। আর সুন্নি বোর্ড এখানে নির্মাণ কাজের জন্য পুরো দায়িত্ব ভার দিয়েছে ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের হাতে।
এই ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে সেখানে একটি মসজিদ তৈরির কথা থাকলেও আপাতত হাসপাতাল গড়ে তা সাধারণ মানুষের হিতার্থে কাজে লাগানো হবে।এ ব্যাপারে ট্রাস্টের সেক্রেটারি আতাহার হুসেন সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, পুরো প্রকল্পের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে বিশিষ্ট স্থপতি দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের ডিন অধ্যাপক এস এম আখতারের উপর। তিনি যে নকশার কথা বলেছেন তা তুলে ধরে আথার হুসেন বলেন, মসজিদটির আদল হবে অন্য মসজিদগুলো থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। স্থপতি এসএম আখতার ইঙ্গিত দিয়েছেন, এটির আদল মক্কার কাবা শরিফের মতো বর্গাকৃতির হতে পারে।দেড় হাজার বর্গ ফুট জুড়ে মসজিদটি গড়া হবে। আয়তনে হবে ঠিক বাবরি মসজিদের মতো। কিন্তু তা দেখতে হবে মক্কার কাবা শরিফের মতো চৌকোনা। এই খবর ইংরেজি দৈনিক হিন্দুস্থান টাইমস, টাইম নাউ ফলাও করে প্রকাশ করেছে।
আতহার আরও বলেন, নতুন মসজিদটি কোনও সম্রাট বা বাদশাহের নামে নামকরণ করা হবে না।বাবরি মসজিদের বিকল্প জমিটি বাবরি এলাকা বলে পরিচিত হবে না, এটিকে ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট কমপ্লেক্স বলে অভিহিত করা হবে। আর হাসপাতালে ছাড়াও বৃহৎ পরিসরে গবেষণা কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। তবে এলাকার মধ্যে একটা মসজিদ তৈরি করা হবে মুসল্লিদের জন্য। এছাড়া সংগ্রহ শালাও নির্মাণ করা হবে। ভারতের যে বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও ইসলামিক সংস্কৃতির মিলন সেসবের উপর গুরুত্ব দেওয়া হবে গবেষণায়।
রায় অনুযায়ী দায়িত্বপ্রাপ্ত শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট গত আগস্টে অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে শুরু করেছে রাম মন্দির নির্মাণ। আর আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মসজিদ নির্মাণের জন্য অযোধ্যার ধন্নিপুর গ্রামে পাঁচ একর জমি বরাদ্দ দেয় রাজ্য সরকার। সেখানে মসজিদ নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করতে ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশন নামে একটি ট্রাস্ট গঠন করেছে উত্তর প্রদেশ সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড।
ফাউন্ডেশনের মুখপাত্র আতহার হুসেইন জানান, ধন্নিপুর গ্রামে নির্মাণ হবে ১৫ হাজার বর্গফুটের মসজিদ। এটি বাবরি মসজিদের আকারের সমান। তিনি বলেন, ‘মসজিদটির আদল হবে অন্য মসজিদগুলো থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। স্থপতি এসএম আখতার ইঙ্গিত দিয়েছেন, এটির আদল মক্কার কাবা শরিফের মতো বর্গাকৃতির হতে পারে।’
কাবা শরিফের মতো ধন্নিপুরের মসজিদটিও গম্বুজ ও মিনার ছাড়াই নির্মাণ হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আতহার হুসেইন বলেন, সেটা একটা সম্ভাবনা হতে পারে।তিনি জানান, এই বিষয়ে স্থপতিকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে।’
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct