আপনজন ডেস্ক: মন্দিরের শহর অযোধ্যায় একটি মসজিদের বাইরে শূকরের মাংস নিক্ষেপ করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করল টুপি পরিহিত ১১ জন দুষ্কৃতি। যদিও পুরিশের তৎপরতায় সেই চক্রান্ত ভণ্ডুল হয়েছে। পুলিম অভিযুক্ত ১১ জনের মধ্যে ৭ জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে এবং বাকি ৪ জনের খোঁজে তল্লাশি চলছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্তরা ওই এলাকায় দাঙ্গা উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করার সময় নিজেদেরকে মুসলিম হিসেবে তুলে ধরতে মাথার খুলির টুপি পরেছিল। অযোধ্যার এই ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাতে। অযোধ্যার এসএসপি এস কে পান্ডে জানান, অভিযুক্তরা বাইকে করে মসজিদের পাশ দিয়ে যায় এবং শান্তি ও সম্প্রীতি বিঘ্নিত করার জন্য মুসলিমদের জন্য নিষিদ্ধ শূকরের মাংস, একটি পবিত্র বইয়ের পৃষ্ঠা এবং কিছু আপত্তিকর পোস্টার ফেলে দেয়। পুলিশ যাদেরকে অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করেছে তাদের মধ্যে রয়েছেন মহেশ কুমার মিশ্র, প্রত্যুষ শ্রীবাস্তব, নিতিন কুমার, দীপক কুমার গুয়ার ওরফে গুঞ্জন, ব্রজেশ পান্ডে, শত্রুঘ্ন প্রজাপতি এবং বিমল পান্ডে। পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে এলাকার সিসিটিভি ফুটেজের সাহায্যে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইন (এনএসএ) এবং গ্যাংস্টার আইনে মামলা দায়ের করা হবে। অতিরিক্ত মুখ্য সচিব (স্বরাষ্ট্র) অবনীশ অবস্থি তৎপর পুলিশ দলকে ১ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। আইজি কেপি সিং ও অযোধ্যার এসএসপি এসকে পান্ডের মতে, এ পর্যন্ত গ্রেফতার হওয়া সাতজন ব্যক্তি স্বীকার করেছে, তারা যথাযথ পরিকল্পনার পরে এই ঘটনা ঘটায় ও মসজিদের বাইরে আপত্তিকর পোস্টার এবং শূকরের মাংস নিক্ষেপ করেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা স্বীকার করেছে যে তারা দিল্লির জাহাঙ্গিরপুরি ঘটনায় বিরক্ত হয়ে মসজিদের সামনে আপত্তিকর সামগ্রী নিক্ষেপের পরিকল্পনা করেছিল, যেখানে হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষে শোভা যাত্রায় আক্রমণ করা হয়েছিল এবং পাথর ছোড়া হয়েছিল।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে অভিযুক্তরা জেরায় জানিয়েছে, তারা গত চার দিন ধরে এই ঘটনার পরিকল্পনা করছিল। মসজিদের সামনে তারা যে সব কাগজপত্র নিক্ষেপ করেছিল, তার তাতে উল্লেখ ছিল জাহাঙ্গিরপুরীর ঘটনার। উল্লেখ্য, একদিন আগেই সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে ঈদের আগে শান্ত পরিবেশ বজায় রাখা ও শান্তি প্রতিষ্ঠার আবেদন জানিয়েছিল দেশের শীর্ষস্থানীয় মুসলিম সংগঠনগুলো। অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড, জমিয়ত উলামাযে হিন্দ এবং অন্যান্য ১৪টি সংগঠনের সভাপতির স্বাক্ষরিত একটি খোলা চিঠিতে সতর্ক করে দিযে বলেছিল ‘সমস্ত মুসলমানদের উচিত ঈদগাহে যাওয়ার পথে এবং বাড়ি ফেরার সময় উভয়েই শান্ত এবং সংযত হওয়া। যারা তাদের উসকানি দেওয়ার চেষ্টা করে তাদের শিকার হওয়া উচিত নয়। ঈদের খুতবায় অত্যন্ত সতর্ক ও পরিষ্কার ভাষা ব্যবহার করুন, যাতে আপনার বলা কোনো কিছুই বিকৃত না হয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct