আমাদের দেশে রাজনীতি, ধর্ম, জাতি, ভাষা নিয়ে তৎপরতার শেষ নেই বললেই চলে। রাজনীতির জন্য লড়াই - হিংসা খুব সাধারণ ব্যাপার, আর আমরা এই পরিবেশে নিজেকে এমন ভাবে দাঁড় করে ফেলেছি যে এতো হিংসা-লড়াই-হানাহানি এই সবকে খুব ছোট ঘটনা এবং স্বাভাবিক বলে মেনে নিয়েছি। সমাজের কিছু মানুষ এখনো আছে যাদের কাজ এই ব্যবস্থাকে প্রশ্ন করতে ভয় করে না। তাদের আমরা খুব খারাপ নজরে দেখতে ভালোবাসি। লিখেছেন আজাবুল বিশ্বাস। আজ প্রথম কিস্তি।
আমাদের দেশে রাজনীতি, ধর্ম, জাতি, ভাষা নিয়ে তৎপরতার শেষ নেই বললেই চলে। রাজনীতির জন্য লড়াই - হিংসা খুব সাধারণ ব্যাপার, আর আমরা এই পরিবেশে নিজেকে এমন ভাবে দাঁড় করে ফেলেছি যে এতো হিংসা-লড়াই-হানাহানি এই সবকে খুব ছোট ঘটনা এবং স্বাভাবিক বলে মেনে নিয়েছি। সমাজের কিছু মানুষ এখনো আছে যাদের কাজ এই ব্যবস্থাকে প্রশ্ন করতে ভয় করে না এবং আজ তাদের আমরা খুব খারাপ নজরে দেখতে ভালোবাসি, আর এটাই তো স্বাভাবিক কারণ স্রোতের বিপরীতে চললে আমাদের মতো সবাই একই জিনিস ভাববে। রাজনীতি, জাতি, ধর্ম এই সব নিয়ে আমাদের তর্ক বিতর্ক করতে খুব কমই লক্ষ্য করা যাই। যা দেখা যাই সেটাকে উল্লেখ করাও হাসির পাত্র। আমরা সাধারণতঃ বিভিন্ন শিক্ষাবিদ বা পলিসি ডক্যুমেন্ট থেকে “কোয়ালিটি এডুকেশন” এর কথা বরাবর শুনতে পেয়ে থাকি, কিন্তু এখনো সাধারণ মানুষের পক্ষে এটা বোঝা মুশকিল যে এই “কোয়ালিটি এডুকেশন” এর ব্যাপারটা আসলে কি? কেউ বরাবর এর উত্তর দিতে পারেনি। কোন বিষয়টা আসলে কোয়ালিটি আর কোনটা নয়। যেভাবে যে পেরেছে সে “কোয়ালিটির” ব্যাপারটা ডিফাইন করার চেষ্টা করেছে। যেমন “শিক্ষার” ব্যাপারটা, রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে স্বামী বিবেকানন্দ, মহাত্মা গান্ধী থেকে এপিজে আব্দুল কালাম, সবাই শিক্ষাকে নিজের মতো করে দেখার চেষ্টা করেছেন আর যে গুলো নিজের জায়গায় খুব যথার্থ।
বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা এমন জায়গায় দাঁড়িয়ে যেটার ডেফিনেশন দেওয়া সেই “শিক্ষার”এবং “কোয়ালিটি “ এই দুটো শব্দের মতোই। আমার কাছে এই কথা বলার যথার্থ কারণ রয়েছে। আজকের শিক্ষা ব্যবস্থার নাম যা প্রহসন চলছে সেটাকে ডিফাইন করাও একটা কঠিন কাজ। প্রতিটা মানুষ আজ শিক্ষাকে নিজের মতো করে ডিফাইন করছে, এবং সেটা নিজের জায়গায় হয়তো ঠিক হতে পারে, আমি প্রধানতঃ তাদের কথা বলছি যারা শিক্ষার ব্যাপারে একটু হলেও মাথা ঘামায়। আমি শিক্ষার ব্যাপারে কেন বলতে চাইছি এর পিছনে অনেক বড়ো রহস্য নেই যা আমি উন্মোচিত করে সবাইকে একটা চমক দিতে চাই। খুব সাধারণ অর্থে আমরা জানি “শিক্ষা হলো সাফল্যের প্রথম সিঁড়ি”, কিংবা বলতে পারি শিক্ষা হলো সমস্ত সম্ভবনার দ্বার। একটা দেশের শিক্ষা নির্ধারণ করে যে এই দেশের উন্নতির আয়ু কত বা দেশ কতটা সমৃদ্ধশালী। শিক্ষা ছাড়া হইতো আজ এই অঙ্কে মাথা লাগানো একটা বৃথা চেষ্টা হবে। কিন্তু যদি সেই শিক্ষা বা কোয়ালিটি শিক্ষা সাধারণভাবে না হয়ে কাগজ কলমে হয়ে যায় তাহলে সেই দেশের বা সমাজের কি অবস্থা হতে পারে। আপনাদের কাছে এই প্রশ্ন আমি ছেড়ে দিলাম। জাতীয় শিক্ষা নীতি ১৯৮৬/১৯৯২ এবং জাতীয় পাঠক্রমের রূপরেখা ২০০৫ এই রকম একটা ব্যবস্থার শিকার। জাতীয় পাঠক্রমের রূপরেখা ২০০৫ এমন একটা ডক্যুমেন্ট যেটা ছাড়া বিদ্যালয়ে বা শ্রেণীকক্ষে যাওয়া এবং শিক্ষন প্রক্রিয়া চালানো সেই রকমই যেটা “ইউটিউবে” পাঁচ মিনিটে গাড়ি কিভাবে চালাতে হয় ভিডিও ক্লিপ দেখে গাড়ি চালাতে লেগে যাওয়ার মতো অবস্থা।
(লেখক সিনিয়র লেকচারার,আজিম প্রেমজি ইউনিভার্সিটি, ব্যাঙ্গালুরু)
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct