আপনজন ডেস্ক: নাইজেরিয়ায় মসজিদ, গির্জা ও অন্যান্য উপাসনালয় থেকে টিকা নেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে। বিভিন্ন দেশে উগ্র ডানপন্থি বিভিন্ন গোষ্ঠী টিকা নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
কখনো কখনো টিকার বিরুদ্ধেই প্রচারণা চালাচ্ছে। এ কারণেই দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে মসজিদ ও গির্জাগুলোতে টিকাদানের ব্যাপারে প্রচারণার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এএফপি জানায়, আফ্রিকার বিশাল এই দেশটিতে প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজের পর মুসল্লিদের টিকার কথা বলছেন ইমামরা। রোববার প্রার্থনার সময় একই আহ্বান জানানো হচ্ছে খ্রিষ্টানদের প্রতিও। সর্বশেষ রোববার রাজধানী লাগোসের ইকোয়ি ব্যাপ্টিস্ট চার্চে ধর্মীয় সার্মন প্রদানকালে পুরোহিত সমবেতদের উদ্দেশে টিকা নেওয়ার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
বলেন, ‘আমাদের সঠিক সময়ে সঠিক কাজটা করতে হবে। এখনই সবাই ভ্যাকসিন নিয়ে নিন।’ এদিন প্রার্থনার পর সমাগতদের লাইন ধরে টিকার নিবন্ধন করতে দেখা যায়। এখন পর্যন্ত ২৪টি দেশের করোনার নতুন ধরন ‘ওমিক্রন’ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে নাইজেরিয়াও রয়েছে। বুধবার আলজাজিরা জানায়, গত সপ্তাহে প্রথম দুজনের দেহে ওমিক্রন শনাক্ত হয়। নাইজেরিয়ার সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (এনসিডিসি) এ তথ্য নিশ্চিত করে।
এদিকে গ্রিসের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ে বেশ জোরেশোরেই আঘাত হেনেছে করোনাভাইরাস। টিকা নেননি এমন যাজকরা একের পর এক আক্রান্ত হচ্ছেন আর গণহারে মারা যাচ্ছেন। আর এ ঘটনা কিছু পুরোহিত ও সন্ন্যাসীর টিকা নেওয়ার বিষয়ে তাদের অবস্থান পুনর্বিবেচনা করার জন্য উদ্বুদ্ধ করছে। গত মাসে বর্তমানে করোনার হটবেড হিসাবে পরিচিত পূর্বাঞ্চলীয় অর্থোডক্স কমিউনিটির অন্যতম কেন্দ মাউন্ট অ্যাথোসে চারজন পুরোহিত করোনাভাইরাসে মারা যান। তাদের কারওই টিকা নেওয়া ছিল না।
গত সপ্তাহে পারতা শহরের একজন যাজক এবং দিসালোনিকির একজন ৪৬ বছর বয়সি আর্কিমান্দি ত মারা যান করোনাভাইরাসে। তাদের কেউই ভ্যাকসিনেটেড ছিলেন না।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, মাউন্ট অ্যাথোসের করোনায় মৃত একজন সন্ন্যাসী টিকা নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু তার প্রবীণ গাইড তাকে টিকা নিতে নিষেধ করেন। গ্রিক অর্থোডক্স চার্চে এটি অস্বাভাবিক নয়। গত দুই বছরে বিপুলসংখ্যক পুরোহিত প্রকাশ্যে ও গোপনে লকডাউন, কারফিউ, মাস্ক এবং এখন ভ্যাকসিনসহ মহামারি প্রতিরোধ ব্যবস্থার বিরোধিতা করছেন। মাউন্ট অ্যাথোসের পবিত্র এসফিগমেনৌ মঠের মঠাধ্যক্ষ আর্কিমান্দি ত বার্থোলোমেউ গত ১৫ নভেম্বর ফেসবুকে লেখেন, যারা ভ্যাকসিন সম্পর্কে ভয় ও মিথ্যা ছড়ায়, তাদের মধ্যে যারা ক্যাসক (যাজকদের লম্বা, আঁটোসাঁটো পোশাক) পরে তারা সংখ্যালঘু।
কিন্তু তারাই জনস্বাস্থ্য ও মানুষের মানসিক অবস্থার সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে। আমরা পরিস্থিতির ‘পয়েন্ট অব নো রিটার্ন’-এ অবস্থান করছি। যারা মহামারি সম্পর্কে মিথ্যা ছড়ায়- তারা ক্ষমতা ও খ্যাতি খোঁজে। তারা কিছু শ্রোতা ও অনুগামী অর্জন করে। তারা মানুষের মধ্যে সঠিক গুণাবলি গড়ে তোলে না। তারা মানুষের ভয় ও আবেগের সুযোগ নেয়। পোস্টে আরও লেখা হয়, গত কয়েক মাসের মধ্যে পুরোহিতদের টিকা গ্রহণের সংখ্যায় একটি নাটকীয় পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct