তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় চত্বরে ভেঙে ফেলা দুটি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তরের সূচনা হল
আপনজন ডেস্ক: তেলেঙ্গানার রাজধানী হায়দরাবাদে মুখ্যমন্ত্রীর পুরনো সচিবালয় ভেঙে নতুন করে গড়ে তোলার প্রক্রিয়া শুরু হয় গত বছরের সেপ্টেম্বরে। নতুন করে সচিবালয় নির্মাণের কাজ করতে গিয়ে ওই চত্বরে থাকা দুটি মসজিদ, একটি মন্দির ও গির্জা ভেঙে ফেলতে হয়। তখন দাবি ওঠে নতুন সচিবালয় গড়ে তোলা হলেও যে যে জায়গায় মসজিদ মন্দির গির্জা ছিল সেগুলি যেন সেখানেই পুনরায় নির্মাণের সুযোগ দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। পরে গত ৫ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রী কেসিআর বলেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের মধ্যে ৭৫০ বর্গফুট করে দুটি মসজিদ গড়া হবে। সরকারের খরচে উপাসনার জায়গাটি পুনর্নির্মাণ করে তা ওয়াকফ বোর্ডের হাতে তুলে দেওয়া হবে। একইভাবে তিনি ঘোষণা করেন, ১৫০০ বর্গ ফুটের মন্দির তৈরি করা হবে এনডওমেন্ট ডিপার্টমেন্ট থেকে। এছাড়া, খ্রিস্টানদের জন্যও গির্জা তৈরি করে দেওয়া হবে। আর এসব করার মাধ্যমে তেলেঙ্গানা যে ‘গঙ্গা যমুনি তাহজিব’-এর প্রতীক তা তুলে ধরে সব ধর্মকে সম্মান জানানো হবে বলে জানিয়েছিলেন কেসিআর।
মুখ্যমন্ত্রীর সেই কথামতো তেলেঙ্গানার নতুন রাজ্য সচিবালয় প্রাঙ্গণে দুটি মসজিদ পুনরায় নির্মাণের জন্য বৃহস্পতিবার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হল পুরানো সচিবালয় ভবন ধ্বংসের পাঁচ মাস পরে। এই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন শীর্ষস্থানীয় ইসলামি শিক্ষাকেন্দ্র জামিয়া নিজামিয়ার প্রধান মুফতি খলিল আহমেদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলি, রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সালিম, রাজ্য বিধানসভার এআইএমআইএম নেতা আকবরউদ্দিন ওয়েইসি, টিআরএস বিধায়ক আমের শাকিল ও ফারুখ হুসেন। এছাড়া আমন্ত্রিত বেশ কয়েকজন অতিথি। নতুন সচিবালয় কমপ্লেক্সের চলমান নির্মাণের পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ জনগণকে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।
রাজ্য সরকার দুটি মসজিদের জন্য ১,৫০০ গজ বরাদ্দ করেছে, যা ২.৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হবে। এ ব্যাপারে তেলেঙ্গানার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলি বলেন, সরকার প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে এবং দুটি মসজিদ দেশের সবচেয়ে সুন্দর মসজিদগুলির মধ্যে একটি হবে। শহরের কেন্দ্রস্থলে হুসেন সাগর হ্রদের কাছে অবস্থিত পুরানো সচিবালয় ভবন ধ্বংসের সময় দুটি মসজিদ এবং একটি মন্দির ধ্বংস করা হয়েছিল। বিভিন্ন মুসলিম সংগঠনের নেতারা মসজিদ নির্মাণে বিলম্বের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজ্য সরকারকে দ্রুত কাজ শুরু করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। অবশেষে তা শুরু হল। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী সম্ভবত পরবর্তী সময়ে মন্দির এবং গির্জার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: