সেক আনোয়ার হোসেন, হলদিয়া: অতিবৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়েছে হলদিয়া পুরসভার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড, বিভিন্ন কারখানা চত্বর ও বাজারহাট। প্ল্যান্ট এরিয়াতে জল জমে যাওয়ার ফলে শিল্পকারখানায় কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে বিশ্বকর্ম পূজার আনন্দ ম্লান।
এইচ পি এল কারখানার বাঁশের ঠাকুর তৈরি যা শিল্প শহরের নজর কেড়েছে পূজা কমিটির সম্পাদক সৌমেন নায়েক বলেন, যে হেতু করোনা বিধিনিষেধ চলছে তা মেনে আমরা স্যানিটাইজার, মাস্ক, এর ব্যবস্থা করেছি সামাজিক দায়িত্ব পালনে রাম পুর বিবেকানন্দ মিশন আশ্রম এর হাতে কয়েক হাজার টাকার আর্থিক সহযোগিতাই করে।
বৃষ্টির জেরে বন্দরে জাহাজে কার্গো হ্যান্ডেলিংয়ের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। নিকাশি বিভ্রাটের ফলে কার্যত জলের তলায় চলে গিয়েছে পুরসভার ১৩ ও ১৪নম্বর ওয়ার্ড। বৃষ্টির জলের সঙ্গে একাধিক কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য মিশে গিয়ে ওই দুটি ওয়ার্ডে বিপর্যয় ডেকে এনেছে। কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য জল ড্রেন উপচে বাড়ি,দোকান, টিউবওয়েলে ঢুকে পড়ায় দেখা দিয়েছে নতুন বিপদ। কয়েক হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
জলমগ্ন হওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারা ভয়াবহ বর্জ্য দূষণের কবলে পড়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ত্রাণ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। আইওসির প্ল্যান্ট এরিয়াতে জল জমে যায়। সঙ্গে সঙ্গে তা নামতে শুরু করে বলে জানান কর্মীরা।
তবে মাসখানেক আগে অতিবৃষ্টির ফলে আইওসি বা অন্যান্য কারখানাগুলিতে জল জমে যে সমস্যা হয়েছিল,এবার শিল্পশহরের স্লুইস গেটগুলি খোলা থাকায় বিপদ ঘটেনি।রোদ ওঠার পর বন্দরে জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের কাজ ফের শুরু হয়। মাসখানেক আগে প্রবল বৃষ্টিতে টাউনশিপ, আজাদহিন্দ নগর, ক্ষুদিরামনগর সহ ৮-১০টি ওয়ার্ড জলনিকাশির সমস্যার কারণে ডুবে গিয়েছিল। টানা এক সপ্তাহ ধরে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মধ্যে কাটাতে হয় হাজার হাজার বাসিন্দাকে। এবার সেই নিকাশি সমস্যার কারণে বিপর্যস্ত ১৩ ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে চিরঞ্জীবপুর ও বৈষ্ণবচকের কয়েক হাজার বাসিন্দা। তাঁরা বলেন,জলে রেণুকা সুগার, আদানি ভোজ্য তেল কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য মিশে যাওয়ার ফলে সব কিছু দূষিত হয়ে গিয়েছে। ২০১৭সালে এই ধরনের বিপর্যয় ঘটেছিল। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিপিসিএল তেল টার্মিনাল, আদানি ও রেণুকা সুগার কারখানা এলাকার জল নিকাশির সুষ্ঠু ব্যবস্থা না থাকায় শিল্পাঞ্চলের ওয়ার্ডগুলির এই দুরবস্থা।
এদিকে, দুটি ওয়ার্ডের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, বাজার সবই জলের তলায়। শিল্পাঞ্চলের বড় বাজার চিরঞ্জীবপুরে দোকানপাট সবই ডুবে গিয়েছে। বিশ্বকর্মা পুজোর সময় শিল্পাঞ্চলের লোকজন এই বাজারেই মূলত কেনাকাটা করেন। বাজার ডুবে থাকায় মাথায় হাত পড়েছে ব্যবসায়ীদের। বস্তিবাসীদের ঘরের মধ্যে জল ঢুকে পড়ায় বহু মানুষ বিপাকে পড়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, পুরসভার তরফে কোনও ত্রাণ শিবির না খোলায় মানুষ সমস্যায় পড়েছেন। স্থানীয় তৃণমূল নেতা জ্যোতিপ্রসাদ দাস বলেন, পুরসভার চেয়ারম্যান ও মহকুমা শাসককে ত্রাণের দাবি করেছি। কিন্তু এখনও সাড়া মেলেনি। মানুষ খুব অসহায়ভাবে দিন কাটাচ্ছেন।পুর চেয়ারম্যান সুধাংশুশেখর মণ্ডল বলেন, ওই ওয়ার্ডের জল যাতে দ্রুত নেমে যায় সেজন্য নিকাশির চেষ্টা করা হচ্ছে। হলদিয়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের এগজিকিউটিভ অফিসার হরিশঙ্কর পানিক্কর বলেন,ওই ওয়ার্ডগুলির নিকাশির জন্য এইচডিএ ও পুরসভা মিলিয়ে একটি প্ল্যান তৈরি করছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct