আপনজন ডেস্ক: জামাআতে ইসলামী হিন্দের পশ্চিমবঙ্গ শাখার পক্ষ থেকে কলকাতা প্রেস ক্লাবে বৃহস্পতিবার আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এই আহ্বান জানানো হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে জামাআতের রাজ্য সভাপতি মাওলানা আব্দুর রফিক বলেন, আমাদের দেশে পারিবারিক সংকটের নানা চিত্র ভেসে উঠছে। গার্হস্থ্য হিংসা সেই সংকটকে তীব্র করেছে। স্ত্রীর প্রতি অত্যাচার, সন্তানের প্রতি মানসিক নিপীড়ন, কন্যাভ্রুণ হত্যা, পণপ্রথা জনিত কারণে বধূ হত্যার ঘটনা সারা দেশে দিনদিন বেড়েই চলছে। স্বামী নিগ্রহও পারিবারিক সংকট সৃষ্টিতে বিশেষ মাত্রা দিয়েছে। মাওলানা আব্দুর রফিক সাহেব আরো বলেন,
পারিবারিক সংকটের মধ্যে পরকীয়া প্রেম, অন্যায্যভাবে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা অহরহ ঘটছে। এক পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০২০ সালের মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জাতীয় মহিলা কমিশন ১৩ হাজার গার্হস্থ্য হিংসার কেস নথিভুক্ত করেছে। এই লকডাউনের যত গার্হস্থ্য হিংসার ঘটনা ঘটেছে বিগত ১০ বছরে ততটা হয়নি, অথচ আক্রান্তদের মধ্যে মাত্র ৭ শতাংশ মানুষই অভিযোগ দায়ের করেছে। লজ্জা ও সম্মানের ভয়ে সব রিপোর্ট জনসমক্ষে আসে না। তিনি গার্হস্থ্য হিংসা রোধের জন্য আহ্বান জানিয়ে বলেন,
সৎ, চরিত্রবান মানুষ তৈরির জন্য শিশুদের প্রথম জীবন থেকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। সুখী ও শান্তিপূর্ণ দাম্পত্য জীবন প্রতিষ্ঠায় স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঐশী ভাবধারায় সুমধুর সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। পরিবারের বয়স্কদের প্রতি সম্মান ও ছোটদের স্নেহের পরশ দিয়ে জীবনকে গড়ে তুলতে হবে। সন্তানদের সুনাগরিক করে গড়ে তোলাই হবে পরিবারের লক্ষ্য। শুধু ডিগ্রী অর্জন নয়, তাদেরকে মানবতাবাদী, সৎ, রুচিশীল এবং ভদ্র মানুষ করে তুলতে হবে। বস্তুবাদী শিক্ষায় যার একান্ত অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। এইদিনে সাংবাদিক সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সাবেক রাজ্য সভাপতি রহমত আলী খান সাহেব, রাজ্য সাধারন সম্পাদক মসিউর রহমান, রাজ্য সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য মাওলানা তাহেরুল হক সাহেব, ডা: মশিহুর রহমান সাহেব, শাদাব মাসুম সাহেব প্রমুখ।
উল্লেখ্য জামাআতে ইসলামী হিন্দ, পশ্চিমবঙ্গ ১০ থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ রাজ্যব্যাপী “সুসংহত পরিবার-সুসংহত সমাজ” শিরোনামে প্রচারাভিযান পরিচালনা করতে চলেছে। এই অভিযানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হল:
প্রত্যেক বাড়িতে শান্তি বজায় রাখতে এবং সমাজকে শক্তিশালী করতে লোকদের সচেতন করা হবে। এ বিষয়ে সব সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় গোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে সাধারণ নীতিমালাকে প্রচার করা হবে। বিবাহ বহির্ভূত জীবনের বিপদকে তুলে ধরা হবে। শান্তি ও সুবিচার প্রতিষ্ঠায় জোর দেওয়া হবে। পরিবারে ন্যায়, সুবিচার প্রতিষ্ঠা, বয়স্ক-দুর্বলদের প্রতি সম্মান এবং সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার প্রচার করা হবে। প্রত্যেকের অধিকার আদায় ও কর্তব্য পালনে সচেতন করা হবে। ভালো পরিবেশ তৈরি করতে শিক্ষা দেওয়া হবে যাতে ভবিষ্যত প্রজন্ম তাদের অধিকার অর্জন করতে পারে। ইসলামী নীতি-নৈতিকতার ভিত্তিতে ব্যক্তিত্বের বিকাশে মুসলমানদের উৎসাহিত করা হবে। মুসলিম উন্মাহর সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে সুন্দর ও সুখী পরিবার গড়ে তুলতে পরিবার সংক্রান্ত মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি নিয়ে আলোচনা করা হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct