আজিজুর রহমান, গলসি: বর্তমানে ইন্টারনেটের জামানা সব খেলাধুলা বিলুপ্তির পথে। ফুটবল ক্রিকেট কোন রকম টিকে থাকলেও উনবিংশ শতাব্দীর বেশ কিছু খেলা এখন বিলুপ্তি হয়ে গেছে। খো খো, চুকিতকিত, লুকচুকুনি, চোরপুলিশ, গুলিডান্ডা, পকুরের জলে হেল হেল, কাবাডি লাললাঠি খেলা সব এখন বন্ধ হয়ে গেছে। কারন সবার হাতেই এন্ড্রোয়েড মোবাইল সেট। যার জন্যই সব কিছু বিলুপ্ত হতে চলেছে। তবে গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েরা এখনও সেই সব খেলার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। আগেকার দিনে পুকুরের জলে ডুবে ডুবে হেল হেল খেলা হত। কলার ভেলা দিয়ে সাঁতার কাটা হত। তাছাড়া অভিভাবকরা নিজেদের ছেলে মেয়েদের সাঁতার কাটা শেখাতেন।
তবে এখনও অভিভাবকদের হাতে সময়ের অভাব। তাই বর্তমান প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা সাঁতার কাটতে পারে না। তাছাড়া লুকচুকুনি, চোরপুলিশ, চু কিতকিত এইসব অনেক খেলা আর কেউ খেলাতে চায় না। মোবাইলে চোখ রাখলেই এখন নামীদামী সব কিছু খেলা দেখতে পাওয়া যায়। এতেই ঘন্টার পর ঘন্টা সময় পার হয়ে যায়। তাই ঘটা করে আর কেউ সেই পুরাতন খেলা খেলতে চায়না। কিছু কিছু ছেলে এখন মোবাইলে ঘন্টার পর ঘন্টা ফ্রী ফায়ার খেলে। তবে গ্রামাঞ্চলে কিছু কিছু জায়গায় এখনও সেই সব পুরাতন খেলার চলন আছে। কারন সেখানকার প্রতিটি পরিবারের কাছে এখনও ইন্টারনেট ও এন্ড্রোয়েড মোবাইল পৌছায়নি। সেখানকার বাসিন্দারা দরিদ্র পরিবার বলেই প্রযুক্তি থেকে পিছিয়ে আছে তারা। এইসব পরিবারের ছেলে মেয়েরাই সেই পুরাতন খেলাগুলির ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। বর্তমানে মোবাইল ইন্টারনেট যুগের মোহ ভুলে পুরনো খেলায় মাতেছে গলসির গ্রামাঞ্চলেের ছেলেরা। সময় পার করতে পুকুরের জলে ডিগবাজি দিচ্ছে ছোট্ট স্কুল পড়ুয়াদের দল। যা দেখে শৈশবকালে কথা মনে পড়ে যায়।
ছেলেদের প্রশ্ন করা হলে তারা জানাই, তাদের পরিবারগুলো বেশ দরিদ্র। বাড়িতে বড় মোবাইল সেট নেই। তাই তারা মোবাইল কিছু দেখে না। প্রতিদিনই পুকরে কমবেশি একঘন্টা স্নান করতে এসে খেলাধুলা করে থাকে। তাছাড়াও তারা গুলিডান্ডা ও চোরপুলিশ খেলে। বিকালে পাড়াতে কাগজ ও পলিথন দিয়ে ফুটবল বানিয়ে খেলাধুলো করে। তারা আরও বলে এখন তাদের স্কুলে বছর ধরে ছুটি চলছে। তাই প্রতিদিন তারা নিয়ম করে খেলা ধুলা করে। এতে তাদের বাবা মা সহযোগিতা করে থাকে। এখান থেকেই বোঝা যায় বর্তমানে দরিদ্র শেনীর মধ্যে বেঁচে আছে আছে উনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীর পুরাতন বহু খেলা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct