আপনজন ডেস্ক: পরমাণু অস্ত্রের দিক থেকে চিন শিগগিরই রাশিয়াকে ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন এক শীর্ষ কর্মকর্তা। আমেরিকার জন্য হুমকি হয়ে ওঠা শীর্ষ দেশের স্থান নেবে বলেও সতর্ক করেছেন দেশটির ওই জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা। যদিও চিন বলছে, তাদের পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ আমেরিকা ও রাশিয়ার তুলনায় খুবই নগণ্য এবং তারা আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।
করোনা শুরুর আগে, বার্ষিক সামরিক মহড়ায় একের পর এক চমক দেখায় চিন। উন্মুক্ত করা হয় অত্যাধুনিক সব হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের। যা দিয়ে মুহূর্তেই ধ্বংস করে দিতে পারে শত্রুপক্ষের দুর্গ। তখন থেকেই আলোচনায় চিনের অস্ত্র মজুদ। বিশ্বের শীর্ষ শক্তিশালী হওয়া দৌঁড়ে থাকা চিন বিভিন্ন ক্ষেত্রেই প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করছে। একদিকে যেমন প্রভাব বিস্তারে চলছে নানা কার্যক্রম। তেমনি তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রেও অনেক দূর এগিয়ে দেশটি।এমন বাস্তবতায় এবার চিনের পরমাণু অস্ত্রের মজুদ নিয়ে বোমা ফাটালেন এক মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা। দ্রুতগতিতে পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার সমৃদ্ধ করে চলা চিন শিগগিরই রাশিয়াকে ছাপিয়ে আমেরিকার জন্য হুমকি হয়ে ওঠা শীর্ষ দেশের স্থান নেবে বলে সতর্ক করেছেন ওই কর্মকর্তা।বিষয়টি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি এড়াতে দুই দেশের মধ্যে কোনো ধরনের ব্যবস্থাও নেই বলে সতর্ক করেছেন আমেরিকার স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডের উপ-অধিনায়ক টমাস বাসিয়ের। আমেরিকার স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডই দেশটির পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডারের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে। মার্কিন বিমান বাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল টমাস বাসিয়ের বলেন, পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ নূন্যতম পর্যায়ে রাখার যে দাবি চিন করে আসছে, তার সঙ্গে তাদের পারমাণবিক সক্ষমতার উন্নয়ন এখন আর কোনোভাবেই সঙ্গতিপূর্ণ অবস্থায় নেই।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল টমাস বাসিয়ের বলেন, গত বছর বিশ্বের সব দেশ মিলে যতগুলো ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে, চিন একাই তার চেয়ে বেশি সংখ্যক পরীক্ষা পরিচালনা করেছে। আগামী দিনগুলোতে এমন সময় আসবে যখন চিনের পক্ষ থেকে হুমকির সংখ্যা বর্তমানে রাশিয়ার হুমকির চেয়ে বেশি হবে। কোনো ধরনের ভুল বোঝাবুঝি বা দ্বিধা-দ্বন্দ্ব দূর করতে রাশিয়ার সঙ্গে যে ধরনের দ্বিপক্ষীয় চুক্তি বা আলোচনার সুযোগ আছে, সেরকম কোন ব্যবস্থা চিনের সঙ্গে আমেরিকার নেই।
ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তির জবাব দিতে আমেরিকা তার পররাষ্ট্রনীতি পুনর্বিন্যাসের উদ্যোগ নেওয়ার মধ্যেই এমন মন্তব্য করলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল বাসিয়ের। আগস্টের শুরুতে এশিয়ার বিভিন্ন দেশ ও অংশীদার দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে চিনের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার বড় করা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবির ওপর ভিত্তি করে করা বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, চিন সম্ভবত পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের জন্য কয়েকশ’ নতুন সাইলো নির্মাণ করছে এবং ওয়াশিংটন অভিযোগ করেছে, বেইজিং পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব এড়িয়ে চলেছে। যদিও ওই দাবি অস্বীকার করে চিন বলছে, তাদের পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ আমেরিকা ও রাশিয়ার তুলনায় খুবই নগণ্য।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct