আপনজন ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ যখন সে রাজ্যে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে নতুন বিল আনতে চলেছেন মূলত সংখ্যালঘুদের নিশানা করে, তখন উল্টো পথে চলছে বিহারের বিজেপি জোট সঙ্গী জনতা দল ইউনাইটেড। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেড জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আইন করারর বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করেছে। জেডি (ইউ) জানিয়ে দিয়েছে, বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে নতুন বিলের পথে হাঁটলেও তারা সেই পথে যাচ্ছে না। কারন, যে ধারণা বশত উত্তরপ্রদেশ সরকার এই আইন আনতে চলেছে তার সঙ্গে তারা একমত নয়।
এ ব্যাপারে জেডি (ইউ)-এর প্রবীণ নেতা এই আইনকে ‘জোর করে চাপিয়ে দেওয়া’ বলে অভিহিত করে বলেছেন, গত বছর কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টের কাছে একটি হলফনামায় বলেছিল, দেশের জনসংখ্যা গত ১০০ বছরে প্রথমবারের জন্য কমেছে। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে কোনও ‘বাধ্যতামূলক’ পৃথক আইন করারর প্রয়োজন নেই। সোমবার এ বিষয়ে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বলেছিলেন, তার রাজ্যে মুসলিম জনগোষ্ঠীর এক উল্লেখযোগ্য সংখ্যক উপস্থিতি থাকলেও সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে অন্যতম পথ হল নারীদের শিক্ষা ক্ষেত্রে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। তার একদিন পর মঙ্গলবার নীতীশের দলের নির্ভরযোগ্য প্রবীণ নেতা কেসি ত্যাগী বললেন, যে কোনও মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলের লোকসংখ্যা বেশি হবে তা ধরে নেওয়া এবং প্রচার করা একবারে ভ্রান্ত ধারণা।
এ ব্যাপারে তিনি এনডিটিভিকে এক সাক্ষাৎকারে উদাহরণ তুলে ধরেছেন দেশের প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনরা এস ওয়াই কুরেশির লেখা একটি বইয়ের তথ্য। এস ওয়াই কুরেশি তার বইয়ে তথ্য সহ তুলে ধরে দেখিয়ে দিয়েছিলেন, মুসলিম অধ্যুষিত লাক্ষাদ্বীপ, কেরল ও কাশ্মীরের শ্রীনগরের একশো শতাংশ মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় যেখানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১.৪ শতাংশ সেখানে উত্তরপ্রদেশে জন্মতার হার ২.৪ শতাংশ। তাই দেশে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ জরুরি হলেও আইন তৈরি করে এই দিকে এগিয়ে যাওয়া ঠিক হবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
নীতীশ কুমারও বলেছিলেন, জনগণের নিয়ন্ত্রণের সমস্যা মোকাবিলার জন্য আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সরকারের অগ্রসর হওয়া উচিত নয়। এ ক্ষেত্রে বলেছিলেন যে তথ্য প্রমাণ রয়েছে তাতে যে পরিবারের মহিলারা যত বেশি শিক্ষিত, সেই পরিবারে জন্মহার তত কম। সেজন্য নীতীশ কুমারের অভিমত প্রকাশ করেছিলেন, যখন মহিলারা সচেতন এবং শিক্ষিত হবেন, তখন এভাবেই জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হ্রাস পাবে। আমি স্পষ্টভাবে বিশ্বাস করি যে কোনও আইন দিয়ে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এ ব্যঅপারে চিনের উদাহরণ তুলে ধরেন।
উল্লেখ্য, বিজেপি শাসিত অসমের পর উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বিল আনতে চলেছে। এই বিলে বলা হয়েছে, যাদের দুটির বেশি সন্তান তারা সরকারি চাকরি পাবে না। সমস্ত ধরনের সরকারি ভরতুকি, সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে। এমনকী স্থানীয় নির্বাচনে লড়তে পারবেন না।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct