আপনজন ডেস্ক: আগামী সপ্তাহে শুরু হতে যাওয়া সংসদের বাদল অধিবেশনে বিজেপির বেশ কয়েকজন সাংসদ দেশে জাতীয় জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ আইনের জন্য পেশ করতে পারেন ‘প্রাইভেট মেম্বার বিল’ (মন্ত্রী নন এমন কোনও সাংসদ যে বিল উত্থাপন করেন)। সূত্র জানিয়েছে বিজেপি-শাসিত উত্তরপ্রদেশ এবং অসমে চালু করা জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বিলের মতোই হবে এই বিলের প্রকার। রাকেশ সিনহা ও অনিল আগরওয়ালের মতো বিজেপি সাংসদরাও জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত বিলটি সংসদে পেশ করার জন্য নোটিশ দিয়েছেন। এদের মধ্যে কেউ একজন আগামী ৬ আগস্ট রাজ্যসভায় বিষয়টি নিয়ে তুলতে পারেন বলে সূত্র জানিয়েছে।
শনিবার উত্তরপ্রদেশ সরকার জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি খসড়া আইন ঘোষণার পরেই এই প্রচেষ্টার কথা সামনে এসেছে। এই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ খসড়া বিলে বলা হয়েছে, যাদের দুটির বেশি সন্তান রয়েছে তাদের কোনও বিশেষ ছাড় বা সুবিধা দেওয়া উচিত নয় এবং তাদের সরকারি সুবিধা নেওয়া থেকে দূরে রাখা উচিত। এই বিলে বলা হয়েছে, যাদের দুটির বেশি সন্তান তারা স্থানীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না, সরকারি চাকুরিতে পদোন্নতি হবে না এবং কোনও ধরণের সরকারি ভর্তুকি দেওয়া হবে না। যদিও বর্তমানে উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রিসভায় যেসব সদস্য রয়েছেন তাদের অনন্ত ১০ জনের দুইয়ের অধিক সন্তান রয়েছে। এক মন্ত্রীর ছয় সন্তানও রয়েছে।
এ ব্যাপারে বিরোধী দলগুলি বলছে, আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন। তাই বিজেপির বিরুদ্ধে তারা এটিকে ‘রাজনৈতিক এজেন্ডা’ বলে অভিহিত করেছে। সমাজবাদী পার্টি বলছে এটি ‘গণতন্ত্রের হত্যা’ এবং এর কিছু সংসদ সদস্য অভিযোগ করেছেন যে এটি মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।
অন্যদিকে, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব সরমা মুসলমানদের জনসংখ্যা হ্রাসে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন। বিজেপি সূত্রগুলি এই পদক্ষেপগুলি ২০১৯ সালের ১৫ আগস্টের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির স্বাধীনতা দিবসের ভাষণের সাথে যুক্ত করতে চাইছে।
যেখানে তিনি দেশে জনসংখ্যা বিস্ফোরণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মোদি। তিনি বলেছিলেন, ‘পরিবার পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণে ভারত বিশ্বের প্রথম দেশ, যার জন্য ১৯৪৯ সালে প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। প্রথম পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি ১৯৫২ সালে চালু হয়েছিল। ১৯৭২ সালে সরকার একটি নতুন জনসংখ্যা নীতি গঠন করেছিল। এখন আমরা দেখছি ২০২৪-২৫ সালের মধ্যে ভারত জনসংখ্যার দিক থেকে চিনকে পিছনে ফেলে দেবে। ভারতের জনসংখ্যা ১৩৫ কোটি, চিনের জনসংখ্যা ১৪২ কোটি। জনসংখ্যার দিক থেকে ভারত চিনকে পেছনে ফেলে দেবে মাত্র কয়েক বছরে।’
বর্তমানে রাজ্যসভায় বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। এর অর্থ এই বিল পাশ করাতে গেলে কোনও বন্ধূ দলের সাংসদদের উপর নির্ভর করতে হবে। ১৯৭০ সালের পরে এরকম ১৪টি ‘প্রাইভেট মেম্বার বিল’ উত্থাপিত হয়েছিল সংসদে। কিন্তু তার একটিও পাশ করানো যায়নি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct