জয়প্রকাশ কুইরি, পুরুলিয়া: একে করোনা পরিস্থিতি, তার উপর ভরা চাষের মরশুম ! আর ঠিক সেই সময় পেট্রল ও ডিজেলের লিটার প্রতি মূল্য বৃদ্ধি আকাশ ছোয়া হওয়ায় মাথায় হাত পড়েছে চাষিদের। পুরুলিয়া জেলার অনেক চাষির ঘরেই এখন চাষ করার জন্য গরুর লঙ্গন নেই। যার ফলে ট্রাক্টারের মাধ্যমেই তারা ধান চাষ করে আসছেন বিগত বছর কয়েক ধরে। তবে এবছর চাষের সময় হটাৎ করে পেট্রল ও ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি হওয়ায় ট্রাক্টারের ভাড়াও বেড়েছে চার গুন আর তা সামাল দিতে হিমশিম স্থানীয় চাষিরা। পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চল গুলোতে ধান চাষের জমি এক ফসলি হওয়ায় চাষিরা চেষ্টা করে থাকেন অন্তত অমন ধনটা ভালো করে ঘরে তুলতে।
অন্যদিকে পৈতৃক জমি ভাগ হতে হতে কৃষকদের একক জমির পরিমান কমে গিয়েছে। ঘরে যদি এক জোড়া গরু রাখা হয় তাহলে সারা বছর খড় জোগানো ও একজন রাখালেরও প্রয়াজন হয়। চাষিদের চাষের জন্য গরু রাখার পিছনে যে খরচ হয় সেই খরচে ট্রাক্টরে লঙ্গন চালিয়ে খরচ বেঁচে যায় ও বেশী জমি চাষ করতেও তারা সক্ষম হন বলে জানিয়েছেন অনেক চাষি । তাই বছর কয়েক ধরে ট্রাক্টারের উপরেই নির্ভরশীলতা বেড়েছে স্থানীয় চাষিদের আশা ভরসা । পাশাপাশি এবছর পুরুলিয়ায় ইয়াস ঘূর্ণি ঝড়ের পর থেকেই ভালো বৃষ্টি হচ্ছে জেলায়।
ভিজে মাটিতে বীজ বোপন করে ভালো ধানের চারাও তৈরী করে ফেলেছেন চাষিরা। ট্রাক্টর দিয়ে জমি প্রস্তুত করে ধান রুইলেই নিশ্চিত। কিন্তু হটাৎ করে পেট্রল ও ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি হওয়ায় টাকা আসবে কথা থেকে ভেবে পাচ্ছেন না জেলার বহু চাষি ! জেলার অন্যতম মাদলা গ্রামের চাষি মুরুলী মোহন কুইরি ,অশনি কুইরিরা বলেন ,ট্রাক্টরে চাষ করার দিন ফুরিয়ে গেছে পেট্রল ও ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায়। আমরা প্রতি বছরেই ধান চাষ করে থাকি ট্রাক্টের ভরসায় এবছর চাষের সময় পেট্রল ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি হওয়ায় চিন্তায় রয়েছি ধান চাষটা করতে পারবো কি না ? অন্যদিকে বর্ষার এই মরশুমে কোন নদী ঘাট থেকে বালি তোলা বন্ধ রাখে প্রশাসন। এবছর ৫ ই জুলাই থেকে বালি তোলা বন্ধ রয়েছে জেলায়। ফলে এই সময় ট্রাক্টর মালিকরাও চাষের জমিতে ট্রাক্টর চালিয়ে হলেও কিছুটা আয় করে থাকেন। তারাও বলছেন চাষিরা এবার সেভাবে ট্রাক্টর নিতে পারছেন না। অনেকে খোঁজ করছেন পুরানো গরু হলের উপর।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct