আপনজন ডেস্ক: বারাণসী সিভিল কোর্টের বিচারক (সিনিয়র বিভাগ) আশুতোষ তিওয়ারি এক রায়ে বারাণসীর কাশী বিশ্বনাথ মন্দির সংলগ্ন জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্বরের মাটি খুঁড়ে তাতে মন্দিরের অস্তিত্ব আছে কিনা তার জন্য সমীক্ষা চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন আর্কেওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়াকে। মুঘল সম্রাট মন্দিরের একাংশ ধ্বংস করে সেখানে এই মসজিদটি তৈরি করেছিলেন বলে বারাণসী সিভিল কোর্টে যে মামলা হয়েছিল তার পরিপ্রেক্ষিতে ওই রায় দিয়েছিলেন। সে সময় জ্ঞানবাপী মসজিদের পরিচালন ভার থাকা আঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ কমিটি এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিল। বারাণসী সিভিল কোর্টের সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে উত্তরপ্রদেশ সুন্নি কেন্দ্রীয় ওয়াকফ বোর্ড বুধবার শতবর্ষ পুরাতন জ্ঞানবাপী মসজিদের প্রত্নতাত্ত্বিক সমীক্ষা চালানোর সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা করেছে বারাণসীর সিভিল কোর্টে।
তবে, বারাণসী সিভিল কোর্টের বিচারক এসএসআই-এর সমীক্ষা করার যে নির্দেশ দিয়েছিলেন তাতে আবেদনকারী ওই মসজিদের জমি হিন্দুদের হাতে তুলে দেওয়ারও দাবি জানিয়েছিলেন।
সেই সঙ্গে দাবি করেছিলেন, সপ্তদশ শতাব্দীতে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব মন্দিরের একাংশ ধ্বংস করে জ্ঞানবাপী মসজিদ তৈরি করেছিলেন।
বুধবার সেই দাবির বিরুদ্ধে বারাণসীর জেলা জজ ওমপ্রকাশ ত্রিপাঠির আদালতে একটি রিভিশন পিটিশন দায়ের করেছে উত্তরপ্রদেশ সুন্নি কেন্দ্রীয় ওয়াকফ বোর্ড। ৯ জুলাই এই মামলার শুনানি হবে। এ ব্যাপারে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের আইনজীবী অভয় যাদব বলেন, ৯ জুলাই শুনানির দিন আমরা সংশোধনী আবেদন গ্রহণ করার পক্ষে সওয়াল করব।
অযোধ্যার মতোই বারাণসীর এই মসজিদকে ঘিরেই ধর্মীয় বিরোধ কয়েক দশক পুরানো। ১৯৯১ সালে প্রথম আদালতে পৌঁছেছিল, যখন স্থানীয় হিন্দু পুরোহিতরা মসজিদ এলাকায় পূজা করার অনুমতি চেয়েছিল। পরে শুনানি স্থগিত করে এলাহাবাদ হাইকোর্ট।
তবে মামলাটি ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ফের বারাণসী সিভিল কোর্টে ওঠে। সেই সময় বিজয় শঙ্কর রাস্তোগি নামে মন্দিরের এক পুরোহিত আর্জি জানিয়েছিলেন, মন্দিরের প্রমাণ পেতে মসজিদ চত্বরের মাটি খনন করা হোক। সেই আর্জি মেনে বারাণসী সিভিল কোর্ট এএসআইকে জ্ঞানবাপী মসজিদ খননের নির্দেশ দিয়েছিল। বারাণসী সিভিল কোর্ট সেই সঙ্গে আর্কেওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার এই সশরীরে সমীক্ষা খতিয়ে দেখতে দু’জন হিন্দু ও দু’জন মুসলিম সদস্য এবং একজন প্রত্নতাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞ সমন্বয়ে একটি পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল এছাড়া বলা হয়েছিল, আদালতের নির্দেশ ছাড়া সংবাদমাধ্যমে কোনও বিবৃতি দেওয়া যাবে না।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct