আপনজন ডেস্ক: ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ারের সম্প্রতি বার তিনেক সাক্ষাৎ নানা জল্পনা উসকে দেওয়ার মাঝে শরদ পাওয়ারের বাড়িতে বিভিন্ন বিরোধী দলের বৈঠক খবরের শিরোনামে চলে আসে। গুঞ্জন ওঠে তাহলেও কি তৃতীয় ফ্রন্টের জন্য ওই বৈঠক ছিল? যদিও ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন না কংগ্রেসের কোনও নেতা। আর বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছেন শরদ পাওয়ার নন, তৃণমূল সাংসদ যশবন্ত সিনহা। তার গঠিত রাষ্ট্র মঞ্চ এই বৈঠকের আয়োজন করায় ধারণা তৈরি হয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিরোধী দলের প্রধান মুখ করে তুলতে প্রাথমিক প্রচেষ্টা।
অনেকে বলতে শুরু করেন কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে চতুর্থ ফ্রন্ট গঠনের উদ্দেশ্যে নিয়েই ছিল এই বৈঠক। কিন্তু শুক্রবার শরদ পাওয়ার সাংবাদিকদের কাছে চতুর্থ ফ্রন্টের তত্ত্ব উড়িয়ে দিয়ে তৃতীয় ফ্রন্টের পক্ষেই মূলত সওয়াল করে। তার বাসভবনে বৈঠকের দুদিন পর শরদ পাওয়ার জানিয়ে দিলেন, ভারত গড়ার লক্ষ্যে বিজেপির বিকল্প শক্তির সন্ধানে বৈঠক হলেও কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে তা সম্ভব নয়। শরদ পাওয়ার বলেন, যদি কোনও বিকল্প শক্তি উত্থাপন করতে হয়, তবে তা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলির সাথে সাথে কংগ্রেসকে অবশ্যই থাকতে হবে।
২২ শে জুন নয়াদিল্লিতে পাওয়ারের বাসভবনের বৈঠকে কংগ্রেসের কোনও সদস্য উপস্থিত না হওয়া প্রসঙ্গে পাওয়ার বলেন, সভায় আলোচনাটি তৃতীয় ফ্রন্টের বিষয়ে ছিল না। তবে আমি রাষ্ট্র মঞ্চে আমার মতামত ব্যক্ত করেছিলাম যে, যদি কেন্দ্রের ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের জন্য বিকল্প তৈরি করতে হয় তবে তা কংগ্রেসের শামিল হওয়া উচিত। তৃতীয় ফ্রন্ট গঠিত হলে তিনি জোটের নেতৃত্ব দেবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে পাওয়ার বলেন,যে এটি সম্মিলিত নেতৃত্বের ভূমিকার উপর নির্ভর করছে। বৈঠকে আলোচনা না হলেও সম্মিলিত নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। কয়েক বছর ধরে সবাইকে একত্রে রাখার জন্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তাই জোটকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করব বলে জানান পাওয়ার।
তিনি আরও বলেন, প্রত্যেক দলের নিজেদের প্রসারিত করার অধিকার রয়েছে। যদি আগামী নির্বাচনে কংগ্রেস একা লড়তে চায়, তবে তাকে স্বাগত জানানো হবে।
পাওয়ারের বাড়িতে বৈঠকটি রাষ্ট্র-মঞ্চের দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল, একটি বিজেপি বিরোধী প্ল্যাটফর্ম, অরাজনৈতিক সমর্থকদের সহ বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য যশবন্ত সিনহার নেতৃত্বে। টিএমসি এবং এনসিপি ছাড়াও বৈঠকে আরএলডি, জাতীয় সম্মেলন, সমাজবাদী পার্টি, এএপি, সিপিএম এবং সিপিআইয়ের প্রতিনিধিত্ব ছিল।বৈঠকে রাজনৈতিক কূটনীতিক ও প্রাক্তন জেডি (ইউ) নেতা পবন ভার্মা, গীতিকার ও কবি জাভেদ আখতার, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বিচারপতি এ পি শাহ, প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত কে সি সিং, বিজেপির প্রাক্তন নেতা সুধেন্দ্র কুলকার্নি, অর্থনীতিবিদ অরুণ কুমার প্রমুখ ছিলেন।
ওই বৈঠকে কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে নতুন ফ্রন্ট গঠনের প্রচেষ্টা কিনা যে গুঞ্জন ওঠে তাতে জল ঢেলে দেন শারদ পাওয়ার। তার কথা থেকে পরিষ্কার বিজেপিকে ঠেকাতে তৃতীয় ফ্র্ন্ট হলে কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে তা সম্ভব নয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct