আপনজন ডেস্ক: সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে দেশদ্রোহ বা ইউএপিএ আইনে গ্রেফতার করায় জেল বন্দি ছিলেন মুম্বাইয়ের দুই ব্যক্তি মুহাম্মদ ইলিয়াস (৩৮) ও মুহাম্মদ ইরফান (৩৩)। প্রায় ৯ বছর জেলবন্দি থাকার পর উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে এনআইএ-র আদালত বেকসুর মুক্তি দিল তাদেরকে। আওতায় সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে দীর্ঘ নয় বছর জেল খাটানোর পরে মঙ্গলবার দু’জন মুসলিমকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
এ ব্যাপারে এই দুই ব্যক্তির আইনজীবী শহীদ নাদিম জানান, মুম্বাইয়ের নান্দেদের বাসিন্দা ইলিয়াস ও ইরফানকে ২০১২ সালে গ্রেফতার করেছিল মহারাষ্ট্রের অ্যান্টি টেরিরজম স্কোয়াড। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল কাশ্মীরের জঙ্গি সংগঠন লস্কর-এ তৈয়বার সঙ্গে চক্রান্ত করে রাজনৈতিক ব্যক্তি, পুলিশ অফিসার ও সাংবাদিক হত্যায় জড়িত ছিল। ২০১৩ সালে এনআইএ তদন্তভার নেয়। তারা তিনজনকে দোষী সাব্যস্ত করলেও ইলিয়াস ও ইরফানকে বেকসুর খালাস করে দেয়।
সংবাদ মাধ্যম সূত্র জানাচ্ছে, গ্রেফতারের আগে ইলিয়াস ফল বিক্রি করতেন এবং ইরফান একটি ইনভার্টার ব্যাটারি দোকান চালাতেন। দুজনে একাধিক জামিনের আবেদন করেছিলেন তবে প্রতিবারই তা প্রত্যাখ্যান করে আদালত।
২০১২ সালে, ইরফান আসলে চার মাসের জন্য মুক্তি পেয়েছিলেন যখন বোম্বে হাইকোর্ট তাকে বলেছিল যে তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলি সত্য বলে বিশ্বাস করার কোনও যুক্তিসঙ্গত ভিত্তি নেই। তবে, এনআইএ হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্ট পেয়ে যাওয়ার পরে তাকে আবার জেলে পাঠানো হয়েছিল। কারণ এজেন্সিটি জানিয়েছিল যে,তাদের জন্য দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। ইরফান জানিয়েছেন, সাত বছর জেলে থাকার তুলনায় তার আগের আঠারো মাস খুব কঠিন সময় গিয়েছে। ভাবেননি যে জীবনে বেঁচে ফিরে আসতে পারবেন।
ইরফান আরও জানান, তার দোকানের সামনে ছিল দোষী সাব্যস্ত মুজাম্মিলের দোকান। তার সঙ্গে ফোনে কথা বলার কারণে এটিএস সন্ত্রাসের সঙ্গে যোগসূত্র খোঁজে।
তাকে জেলমুক্ত করারর পিছনে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের। জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ তাদের হয়ে আইনি লড়াইয়ে আদালতে বলেছিল, ইরফানকে কখনই নোটিশ দেওয়া হয়নি। শীর্ষ আদালতে জামিনের আদেশের শুনানিতে এনআইএ তাকে বক্তব্য রাখার সুযোগ দেয়নি।
ভারতে দ্বিতীয় কোভিড -১৯ এর সময় ইরফানের বাবা-মা উভয়ই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তাঁর বাবা জেলা পরিষদের অবসরপ্রাপ্ত চালক।
বৃহস্পতিবার যখন ইলিয়াসকে মুক্তি দেওয়ার খবর নান্দেদে ছড়িয়ে পড়ায় প্রতিবেশী ও আত্মীয়রা তাকে অভিনন্দন জানাতে তার বাড়িতে যান।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct