আপনজন ডেস্ক: আফগান শান্তিচুক্তি অনুযায়ী আফগানিস্তান থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো বাহিনী। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন এর মাধ্যমে একটি অন্তহীন যুদ্ধ শেষ হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হল। সেই উপলক্ষে যুদ্ধবিধস্ত দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় হেলমান্দের প্রদেশে অবস্থিত মার্কিন সামরিক বাহিনীর অন্যতম প্রধান ঘাঁটি লেদারনেক আফগান সেনাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রবিবার আনুষ্ঠানিকভাবে এ হস্তান্তর কার্যক্রম হয়।
মার্কিন ও ব্রিটিশ বাহিনী আফগানিস্তানে ২০১৪ সালে যুদ্ধের মিশন শেষ হওয়ার পর থেকেই দেশটির দক্ষিণের বেশিরভাগ ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ আফগান বাহিনীর হাতে ছেড়ে দেয়। ২০১৮ সালে তালেবান হামলা বাড়তে থাকলে তারা আবার হেলমান্দে ফিরে আসে।
বিবৃতিতে একটি ছবিও শেয়ার করা হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, হস্তান্তর কার্যক্রমের সময় উভয় পক্ষের কমান্ডাররা একে অপরকে সকল কিছু বুঝিয়ে দিচ্ছে। সামরিক ঘাঁটির সকল সুযোগ-সুবিধা এখন থেকে নিয়ন্ত্রণ করবে আফগান সেনাবাহিনী। এর আগে ২০১৪ সালে যৌথ যুদ্ধ মিশনের সমাপ্তির পরে আফগানিস্তানের দক্ষিণে কয়েকটি সামরিক ঘাঁটি খালি করে মার্কিন ও ব্রিটিশ বাহিনী। এরপর ন্যাটো-নেতৃত্বাধীন রেজোলিউট সাপোর্ট মিশন শুরু হয়েছিল এবং আফগান বাহিনী দেশব্যাপী সুরক্ষার দায়িত্ব নেয়।
জানা যায়, সৈন্যদের পাশাপাশি মার্কিন ঠিকাদার ও সরকারি কর্মীরাও আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরছেন। আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই প্রত্যাহার প্রক্রিয়া শেষ হবে বলে জানিয়েছে পেন্টাগন।
তবে প্রত্যাহার প্রক্রিয়ার বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে কিনা সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। আফগানিস্তানে বর্তমানে ২ হাজার ৫০০ স্বীকৃত সৈন্য অবস্থান করছে। এর বাইরেও বিশেষ অভিযানে অংশ নেয়া কয়েকশ সৈন্য রয়েছে, যা স্বীকৃত না। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশমতো সব সৈন্যই দেশে ফিরবে বলে জানানো হয়েছে।
এর আগে গত ১৫ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক বিবৃতিতে জানান, আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের দীর্ঘদিনের যুদ্ধ-সংঘাতের অবসান চান তিনি। তিনি বলেন, আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনাকে সরিয়ে নেয়া হবে। তবে সব সেনাকে সরিয়ে নিলেও আফগানিস্তানকে সব ধরনের সমর্থন দিয়ে যাবেন বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি। তবে দেশটিতে আর সামরিক সহায়তা দিতে চান না বলেও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
নাইন ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলার জেরে ২০০১ সালের ৭ অক্টোবর আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন আগ্রাসন চালায়। ওই বছর ২০ ডিসেম্বর জাতিসঙ্ঘ আফগানিস্তানে আন্তর্জাতিক নিরপত্তা সহায়ক বাহিনীর অবস্থানের অনুমোদন করলে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোটের অংশীদার ৪৩টি দেশের সৈন্য দেশটিতে অবস্থান নেয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ঘোষণা অনুসারে আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য ৩৫টি দেশের নয় হাজার পাঁচ শ’ ৯২ সৈন্য প্রত্যাহারের কথা রয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct