রাকিবুল ইসলাম, বহরমপুর: একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবি কংগ্রেসের। জেলায় কংগ্রেসের গড় গুড়িয়ে গেল বিরোধী দাপটে। একটিও আসন ধরে রাখতে পারলো না কংগ্রেস। অধীর দূর্গ বলে পরিচিত বহরমপুরেও কার্যত পরাস্ত হতে হল হাত চিহ্নকে। জেলায় বিকল্প শক্তি হিসেবে এবারের নির্বাচনে প্রথম সারিতে উঠে এল কোথাও তৃণমূল তো কোথাও বিজেপি৷ বিগত নির্বাচনে জেলায় নিজেদের ধরে রাখতে পারলেও, পরে তাতে আসতে আসতে থাবা বসিয়েছে ঘাসফুল শিবির। মুর্শিদাবাদ জেলার তিনটি লোকসভা আসনের মধ্যে বিগত নির্বাচনে দুটি আসন কংগ্রসের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয় তৃণমূল। বহরমপুর লোকসভা আসনটি কিন্তু ধরে রাখতে সক্ষম হয় কংগ্রেস। বহরমপুর থেকে বিপুল পরিমান ভোট পেয়ে সংসদ পদে পুনরায় নির্বাচিত হন অধীর চৌধুরী। কিন্তু এবারে একুশের নির্বাচনে শেষ সম্বল বহরমপুর লোকসভাতেও পরাস্ত হতে হল কংগ্রেসকে। বিকল্প শক্তি হিসেবে বহরমপুরে শীর্ষে উঠেএল বিজেপি। যদিও এই পরাজয়কে মানুষের রাই বলেই স্বীকার করে নিয়েছে জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব মনোজ চক্রবর্তী।
প্রচুর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের বাস মুর্শিদাবাদ জেলায়। সংখ্যালঘুরাই সংখ্যা গরিষ্ঠ এ জেলায়। তবে কি এই সংখ্যালঘুরাই ভোট ভ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াল মুর্শিদাবাদে? যে মেরুকরণের ভিত্তিতে রাজ্য স্থরে প্রচার চলছিল সেই হাওযায় কি হল জেলার নির্বাচনে ? হিন্দুর ভোট বিজেপিকে আর সংখ্যালঘুদের ভোট গেল তৃণমূলের ঝুড়িতে ? মুর্শিদাবাদে ২০টি আসনের মধ্যে ১৮টি তেই জয় পেয়েছে তৃণমূল। ২টি আসনে বিজেপি। একটিতেও দাগকাটতে পারেনি কংগ্রেস। কোথাও দ্বিতীয় বা কোথাও তৃতীয় প্রতিপক্ষ হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতাই উঠে এসেছে হাত চিহ্ন। প্রশান্ত কিশোরের নির্বাচনী রনকৌশলের কাছে পরাস্ত হতে হয়েছে বলে অকপটে স্বীকার করে নিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।
বহরমপুর ও মুর্শিদাবাদ এই দুই বিধানসভায় জয়ী হয়েছে বিজেপি। যদি মেরুকরণের ভিত্তিতে নির্বাচন হয় তবে সংখ্যালঘু জেলা থেকে বিজেপির এই উত্থান অকল্পনীয়।
এই অবিশ্বাস্য জয়ের কথা স্বীকার করে নিলেন মুর্শিদাবাদ বিধানসভার বিজেপি জয়ী প্রার্থী গৌরীশঙ্কর ঘোষ।
মুর্শিদাবাদ ২০১১ সালে যে ১৪টি আসন পেয়েছিল কংগ্রেস, ২০১৪ সালে তৃণমূলের ব্যাপক উত্থানেও সেই আসন ধরে রাখতে পেরেছিল কংগ্রেস। কিন্তু এবারে একবারে শূন্য কংগ্রসের। এই পরাজয়ের জন্য অধীর চৌধুরীকে কটাক্ষ করে বকলমে তাকে অবসর নেবার কথা বলেন জেলা তৃণমূল নেতা অশোক দাস।
কংগ্রেস শূন্য, বিজেপির ২টি আসন বাকিতে বাজিমাত তৃণমূলের। তবে কি আগামী দিনে জেলায় তৃণমূলের বিকল্প শক্তি হিসেবে বিজেপিকেই মেনে নিচ্ছে--- ঘুরপাক খাচ্ছে সেই প্রশ্নই নবাবের জেলা মুর্শিদাবাদে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct