আপনজন ডেস্ক: মাদ্রাসা শিক্ষকদের মিউচ্যুয়াল ট্রান্সফারে ‘নো অবজেকশন’ সার্টিফিকেট দিতে না চাওয়া নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে এক মামলা করেন তিনজন মাদ্রাসা শিক্ষক। সেই মামলার রায়ে বৃহস্পতিবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু নির্দেশ দিলেন, এ সপ্তাহের মধ্যে ওই শিক্ষকদের মিউচ্যুয়াল ট্রান্সফারে ‘নো অবজেকশন’ দিতে হবে সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসাকে। এদিন কলকাতা হাইকোর্ট মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি এলাকার কুমারপুর নিসারুদ্দিন হাইমাদ্রাসার পরিচালন কর্তৃপক্ষকে এই নির্দেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলাকারী মাদ্রাসা শিক্ষকদের আইনজীবী সৈয়দ নুরুল আরেফিন।
আইনজীবী আরেফিন জানান, পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন সরকার পোষিত মাদ্রাসাগুলিতে শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারীদের মিউচ্যুয়াল ট্রান্সফারের জন্য নোটিশ জারি করে বলেছিল অনলাইনে ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ থেকে আবেদন করতে পারবেন মাদ্রাসা শিক্ষকরা। সেই মতো অনলাইনে আবেদন জানিয়েছিলেন, কুমারপুর নিসারুদ্দিন হাইমাদ্রাসার তিন শিক্ষক সিরাজ আলি খান, জোহেব হাসান ও দীপালি মাইতি। আইনজীবী আরেফিন জানান, মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী প্রথম ধাপে অনলাইনে ফরম পূরণের পর যখন মাদ্রাসার টিচার ইনচার্জ নুরুল ইসলামকে তারা নো অবজেকশন দেওয়ার জন্য আর্জি জানান তখন তিনি মাদ্রাসার অ্যাডমিনিস্ট্রেটর রিপন মল্লিকের সঙ্গে কথা বলে তার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন। কিন্তু সেই নো অবজেকশন সার্টিফিকেট না দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন জানান ওই তিন শিক্ষক। সেই মামলায় আদালত সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসাকে নির্দেশ দিয়েছে এক সপ্তাহের মধ্যে ওই তিন মাদ্রাসা শিক্ষককে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট দিতে হবে যাতে ৩১ মার্চ জমা দেওয়ার শেষ সময়সীমার মধ্যে আবেদন জমা দিতে পারেন তারা।
আইনজীবী নুরুল আরেফিন সূত্র জানিয়েছে, আবেদনকারী শিক্ষকরা হলেন সিরাজ আলি খান। তার বাড়ি হুগলির গোঘাট থানা এলাকার কোকন্দ গ্রামে। দীপালি মাইতির বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের খাইরুল্লা চক গ্রামে। আর জোহেব হাসানের বাড়ি মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলার আলতাবারতলায়।
এদিন মামলার শুনানিতে, আইনজীবী সৈয়দ নুরুল আরেফিন মাদ্রাসা শিক্ষক ত্রয়ের হয়ে সওয়াল করে বলেন, ওই মাদ্রাসায় অন্যান্য বেশ কয়েক মাদ্রাসা শিক্ষককে মিউচ্যুয়াল ট্রান্সফারের জন্য নো অবজেকশন দেওয়া হলেও এই তিনজনকে দেওয়া হচ্ছে না। তিনি জানান ২০১৩ সালের সিরাজ আলি খান ওই মাদ্রাসায় যোগ দেন। এ বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি তিনি মিউচ্যুয়াল ট্রান্সপারের জন্য আবেদন করলেও তাকে নো অবজেকশন দিচ্ছেন না মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ্। ৩১ মার্চ নো অবজেকশন সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার শেষ তারিখ হওয়ায় তাদেরকে অবিলম্বে তা দেওয়ার আর্জি জানালে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু তা মঞ্জুর করেন। নির্দেশ দেন এক সপ্তাহের মধ্যে কুমারপুর নিসারুদ্দিন হাইমাদ্রাসাকে ওই তিন শিক্ষককে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট দিতে হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct